বয়স মাত্র পাঁচ বছর। বয়সটা দুরন্তপনা হলেও আব্দুল্লাহ আল মাহাবুবের (৫) বেশির ভাগ সময় থাকতে হচ্ছে বিছানায়। সেটা কখনো বাড়িতে, আবার কখনো হাসপাতালে। কারণ, তার হার্টে ছিদ্র ও একটি বাল্ব নষ্ট। টাকার অভাবে জরুরি অস্ত্রোপচার করাতে না পারায় শিশুটির জীবন এখন চরম সংকটে।
মাদারীপুর শহরের ২ নম্বর শকুনি এলাকার মো. সাইদুর হাওলাদার ও শ্রাবণী আক্তারের একমাত্র ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহাবুব (৫)। প্রথম সন্তান ছেলে হওয়ায় বাবা-মায়ের ঘরজুড়ে আনন্দ ছিল, ছিল নানা স্বপ্ন। কিন্তু জন্মের কয়েক মাস পরই তাঁদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। প্রায়ই অসুস্থ থাকায় ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যায়, আব্দুল্লাহ জন্মগতভাবেই এই জটিল রোগে ভুগছে। এর পর থেকে মা-বাবা দিশেহারা হয়ে পড়েন।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাকে সুস্থ করতে জরুরিভাবে অপারেশন দরকার। অপারেশন করতে ছয় লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সেই টাকা পরিবারের নেই। প্রায় পাঁচ বছর ধরে শিশুটিকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি। এখন একসঙ্গে এতগুলো টাকা জোগাড় করতে পরিবারের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বর্তমানে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু আব্দুল্লাহ।
শিশু আব্দুল্লাহর মা শ্রাবণী আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে প্রায় অসুস্থ থাকে। বর্তমানে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাকে জরুরিভাবে অপারেশন করাতে হবে। কিন্তু টাকার অভাবে তা করাতে পারছি না। দিনে দিনে ছেলেটা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে ছেলের এই কষ্ট মেনে নিতে পারছি না। অপারেশন করাতে ছয় লাখ টাকা লাগবে। এতগুলো টাকাও নেই যে অপারেশন করাব। এখন আমরা কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।’
শিশুটির দাদি রিজিয়া বেগম বলেন, ‘চোখের সামনে নাতির এত কষ্ট সহ্য হয় না। জন্মগতভাবে ওর এই সমস্যা। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কোনো লাভ হয়নি। এখন অপারেশন প্রয়োজন। অপারেশনের জন্য এত টাকা কোথায় পাব। সবাই একটু সহযোগিতা করলে হয়তো ছোট্ট এই আব্দুল্লাহকে বাঁচানো সম্ভব হবে।’
মাদারীপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আফজাল হোসাইন বলেন, শিশু আব্দুল্লাহর জন্মগতভাবেই হার্টে সমস্যা। তাই তার পরিবার থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে দরখাস্ত করেছিল। যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পাওয়ায় শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
পরিবারটি এখন সমাজের বিত্তবান ও মানবিক মানুষের দিকে তাকিয়ে আছে। একটি সফল অস্ত্রোপচারই পারে শিশু আব্দুল্লাহর জীবন ফিরিয়ে দিতে এবং তার মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে।