জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ক্যাসিনোকান্ডের অন্যতম হোতা রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও যুগ্মসম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করে।
ঢাকার আদালতের দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা জুলফিকার হোসেন বুধবার জানান, এনু ও রুপন ছাড়াও তাদের সহযোগী হারুন অর রশীদ ও আবুল কালাম আজাদকেও আসামি করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
এর আগে গত ১০ জুন দুপুরে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেছিলেন, এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি মো. এনামুল হক এনুর বিরুদ্ধে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া তার সহযোগী হারুন অর রশীদ ও আবুল কালাম আজাদ ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে এনামুল হক এনুকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে তদন্তে পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৬ হাজার ৯৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর এনুর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। অপরদিকে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রুপনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের আরেক সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী। পরে তদন্তকালীন আরও অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যায় দুজনের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেই ধারাবাহিতায় ২৪ সেপ্টেম্বর দুই ভাই এনু-রুপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে টাকা ও গয়না জব্দ করার পর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশীদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র্যাব।
গত বছর ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থেকে এনু ও রুপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরে গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা, পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি স্বর্ণ জব্দ করে র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের একটি, মানি লন্ডারিং আইনের ছয়টি মামলা রয়েছে।