রাজধানীর জুরাইনে কবি নজরুল লেন কানা জব্বারের গলিতে পাপ্পু শেখ (২৬) নামের এক সিএনজি অটোরিকশাচালককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জুরাইন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১০।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পাপ্পু শেখকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আজ ডিএমপির কদমতলী থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন নিহত পাপ্পুর বাবা মিন্টু শেখ।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. ইউসুফ সরদার (৪৫) ও মো. উজ্জল ওরফে কাঞ্চি (৩০)।
র্যাব-১০ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. পাপ্পু শেখের (২৬) সঙ্গে স্থানীয় মাদক কারবারি বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পা গ্রুপের সঙ্গে মাদক কারবারকে কেন্দ্র করে বিরোধ তৈরি হয়। এতে বাপ্পা গ্রুপের সদস্যরা তাঁকে মারার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল সন্ধ্যায় তাঁকে টার্গেট করা হয়।
র্যাব-১০ আরও জানায়, ঘটনাস্থলে বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পা (৪০) আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে পরপর তিনটি গুলি করেন এবং তাঁর মধ্যে একটি গুলি পাপ্পুর শরীরে লাগে। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আজ ময়নাতদন্ত শেষে নিহত পাপ্পুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনার পর আজ নিহত পাপ্পু শেখের বাবা মন্টু শেখ বাদী হয়ে বাপ্পারাজসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। প্রাথমিকভাবে পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে জানা গেছে। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। আজ সকালে জুরাইনের আলমবাগ এলাকা থেকে মো. ইউসুফ সরদারকে এবং দুপুরে জুরাইন রেলগেট এলাকা থেকে মো. উজ্জল ওরফে কাঞ্চিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার মো. ইউসুফের বিরুদ্ধে মাদক আইনের মামলাসহ তিনটি মামলা রয়েছে এবং মো. উজ্জলের বিরুদ্ধে মাদক আইনে দুটি মামলা রয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যায় পাপ্পু শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য নিজ ভাড়া বাসা থেকে বের হন। পথে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্রসহ আসামিরা তাঁর ওপর হামলা চালান। নিহত পাপ্পুর বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বাসাবাড়ী গ্রামে। পাপ্পু সিএনজি অটোরিকশা চালাতেন। স্ত্রী মোছা. জান্নাত ও এক ছেলেকে নিয়ে পূর্ব জুরাইনের মিষ্টির দোকান এলাকায় থাকতেন।
নিহত পাপ্পুর বাবা মন্টু শেখ বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় পাপ্পু বাসা থেকে বের হয়। এর ১০ মিনিট পরই খবর আসে, তাকে গুলি করা হয়েছে। গিয়ে শুনি, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
মন্টু শেখ আরও বলেন, ‘আমার দুইটা ছেলে, পাপ্পু বড়। তার আড়াই বছরের একটা ছেলে আছে। তারা আমার নাতিটাকে এতিম করে দিল।’