পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির মামলা
রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ছয়জনকে আগামী ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (২৫ মে) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নির্দেশ দেন।
অন্য চারজন হলেন—হাসিনার ভাগনে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াসি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) নাসির উদ্দিন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ব্যক্তিগত সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
এ দিন প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগসংক্রান্ত ছয় মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট থানা থেকে চার মামলায় আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে প্রতিবেদন না আসায় ওই চার মামলায় আগামী ১৭ জুন গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেন আদালত। বাকি দুই মামলায় ছয়জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে বলা হয়েছে, তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আদালত তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
এসব মামলায় অন্য যাঁরা আসামি, তাঁরা হলেন—শেখ রেহানার কন্যা আজমিনা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, রাজউকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার; সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবি গোলদার ও কাজী ওয়ানি উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন); মো. অলিউল্লাহ, আবাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সহকারী শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী আনিসুর রহমান মিয়া, রাজউকের সদস্য মো. খুরশিদ আলম, তন্ময় দাস, মো. নাসির উদ্দিন, সাবেক সদস্য মেজর (অব.) শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, মো. মাজহারুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, নায়েব আলী শরীফ ও উপপরিচালক কামরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব মোহাম্মদ ও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আদালতের প্রসিকিউশন কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৩ ও ১৫ এপ্রিল আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। নিজের ও স্বজনদের নামে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করা হয়। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুদক এই মামলাগুলো করে।
মামলার প্রত্যেকটিতে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। অন্যান্য মামলায় বিভিন্নজনকে আসামি করা হয়। তবে ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তা প্রত্যেকেই শেখ হাসিনার সঙ্গে ছয় মামলার আসামি।
এর আগে ২৫ শে মার্চ দুদক পাঁচ মামলায় হাসিনা, জয়, রেহানা, টিউলিপ, রাদওয়ান, আজমিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযোগপত্রে ছয় মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
দুদকের নথি অনুসারে, শেখ হাসিনা রাজউক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ করে নিজের জন্য, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ রেহানার ছেলেমেয়েদের জন্য তথ্য গোপন করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন।