নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খানকে (৭০) তাঁর বাড়িতে ঢুকে আজ শনিবার গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তিনি পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে ৫ ঘণ্টা উপজেলার ইটাখোলা গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীসহ তাঁর সমর্থকেরা।
পরে বেলা দেড়টার দিকে অবরোধস্থলে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারী ও সমর্থকেরা বেলা ২টার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন।
এর আগে আজ শনিবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খানকে (৭০) তাঁর বাড়িতে ঢুকে গুলি করে আহত করে দুর্বৃত্তরা।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তাঁর সমর্থকেরা সকাল ৮টার দিকে শিবপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় শতাধিক সমর্থক ‘হারুন খানের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেন। শিবপুর মডেল থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি তুলে ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিনিয়া জিন্নাত ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার মহাসড়ক থেকে অবরোধকারীদের উঠে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তারা শুনেননি। পরে জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান ও পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম অবরোধস্থলে গিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ সরিয়ে নিলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান অবরোধকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান শিবপুর উপজেলার প্রবীণতম রাজনৈতিক নেতা। তিনি দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তদের গুলি করার ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের দ্রুততম সময়ে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে পুলিশ। তারা যেই হোক, যত শক্তিশালীই হোক, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা বলেন, সকাল সোয়া ৬টার দিকে তিনজন লোক হারুনুর রশিদ খানের সঙ্গে দেখা করতে বাসার অতিথি কক্ষে আসেন। এ সময় তাদের বসতে বলে আপ্যায়নের উদ্দেশ্যে বাসার ভেতরের দিকে ফিরলে তাঁদের একজন পিস্তল বের করে হারুন অর রশিদ খানের পিঠে পরপর দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জরুরি চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।