রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পানির ট্যাংকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া তিন শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আলাউদ্দিন নগর বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (৪০), একই উপজেলার ইসলাম নগর গ্রামের তবারক হোসেনের ছেলে রাব্বি (১৭) ও জমগ্রাম এলাকার মৃত তৈয়বুর রহমানের ছেলে লিটন (৩৫)। তিনজনেই পেশায় রড মিস্ত্রি।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই-ব্লকের ১৪ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর প্লটে নির্মাণাধীন ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ডে পানির ট্যাংকের ভেতরে বাঁশ-খুঁটি খোলার সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে ফরিদুল ইসলাম, রাব্বি ও লিটনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ছাড়া ওই ট্যাংক থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শাহিনুর নামে আরও এক শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। তিনি বর্তমানে কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
নিহত রাব্বির খালাতো ভাই মো. ওয়ালিব জানান, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ওই নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতেন চার শ্রমিক। ভবনটির একতলার কাজ শেষ। আজ এর নিচের পানির ট্যাংকের সেন্টারিংয়ের বাঁশ-কাঠ খোলা ও পরিষ্কার করার কাজ ছিল। এ জন্য একটি বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগ দিয়ে পানির ট্যাংকের ভেতরে নিয়ে লাগান তাঁরা। এরপর একটি মই দিয়ে প্রথমে ফরিদুল ট্যাংকের ভেতরে নামেন। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি মই থেকে পানিতে পড়ে যান। শব্দ শুনে রাব্বি একই মই বেয়ে ট্যাংকে নামেন এবং তিনিও পানিতে পড়ে যান। এরপর শাহিনুর নামে একজন তাঁদেরকে তুলতে গেলে তিনিও পানিতে পড়ে যান। এই ঘটনা দেখে লিটন মই বেয়ে নেমে তাঁদের ওঠানোর চেষ্টা করলে তিনিও পানিতে পড়েন।
পরে অন্য শ্রমিকেরা বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ করে চারজনকেই পানি থেকে তোলেন। তবে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে ফরিদুল, রাব্বি ও লিটনের।
এ ঘটনায় ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, নির্মাণাধীন ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ডে পানির ট্যাংকের ভেতরে বাঁশ-খুঁটি খোলার সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আহত শাহিনুরকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত।