কখনো জেলা প্রশাসক (ডিসি), কখনো পুলিশ সুপার (এসপি), আবার কখনো জেল সুপারের পরিচয় দিতেন তোরাব আলী সিকদার ওরফে রেজাউল করিম। তাঁর নেতৃত্বে কারাবন্দীর স্বজনদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন। সেই অর্থ থেকে নিজ এলাকায় দান-খয়রাতও করতেন তোরাব আলী।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, র্যাব-১৫-এর কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম।
এর আগে, গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, একটি মাইক্রোবাস, আটটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও দুটি বাটন ফোন, ১৪টি সিম কার্ড।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চক্রের প্রধান কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী এলাকার তোরাব উদ্দিন শিকদার (৪০), চকরিয়ার উত্তর মেধাকচ্ছপিয়া এলাকার মো. বাদশা (৩০), একই উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকার তারেকুর রহমান (২০), মো. জোবায়ের (২৩), এমদাদ উল্লাহ মারুফ (২০) ও ইউনুস কবিরের স্ত্রী মিশকাত জান্নাত জুলি (১৮)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দুই বছরের বেশি সময় ধরে ২০ জন সদস্যের এই প্রতারক চক্রটি কক্সবাজারে সক্রিয়। তাঁরা কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের স্বজনদের টার্গেট করেন। তাঁদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে মোবাইলে কল দিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাবের অধিনায়ক এবং জেল সুপারের পরিচয় দিয়ে কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতেন।
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এই চক্রের মূল হোতা তোরাব আলী। একসময়ের হতদরিদ্র তোরাব আলী প্রতারণা করে অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে যান। এলাকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে মোটা অর্থের অনুদান দিয়ে প্রধান অতিথিও হতেন তোরাব আলী। এর মধ্যে তোরাব আলী এলাকায় কোটি টাকা অনুদানে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
আনোয়ারুল ইসলাম আরও জানান, এই প্রতারক চক্রের এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। একই সঙ্গে এই ছয়জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। তাঁদেরকে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়েরের পর থানায় সোপর্দ করা হবেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।