চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকেরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬৪ জন চিকিৎসক চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। বেসরকারির পাশাপাশি এবং সরকারি দুই হাসপাতালে তাই দেখা দিয়েছে চিকিৎসক সংকট।
ইতিমধ্যে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে ৩০ জন চিকিৎসক চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেনকে চিঠি দিয়েছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যারা সরাসরি চমেকের অধীনে চিকিৎসাসেবা দিতেন। এ ছাড়া চিকিৎসক স্বল্পতাতো আছেই।
এদিকে শুধু চমেক নয়, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও চিকিৎসক স্বল্পতা রয়েছে। এখানে ১০ জন কনসালট্যান্ট দরকার বলে জানান হাসপাতালটির সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. আবদুর রব মাসুম।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সর্বশেষ তথ্যমতে, এখনো ৬৪ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে চলতি মাসে ১১ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এরই মধ্যে সরকারি-বেসরকারি উভয় চিকিৎসকই রয়েছেন।
চমেকে সব মিলিয়ে শিক্ষানবিশসহ ৫০০ চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। একইভাবে জেনারেল হাসপাতালে ১৩৬ জন কর্মরত।
এদিকে চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমিত হয়ে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। শুধু চলতি মাসে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২৩১ জন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও জেনারেল হাসপাতালে শয্যার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি। চিকিৎসক সংকটে তাই ব্যাহত হচ্ছে করোনা রোগীর চিকিৎসাসেবা।
চট্টগ্রাম বিএমএ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী বলেন, সরকারের কাছে অনুরোধ করোনা চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, সেটি সরকারি বা বেসরকারি হোক তাঁদের পরিবারের পাশে যেন দাঁড়ায়।
উল্লেখ্য চমেকে হাসপাতালে করোনা রোগীর সেবায় গত ১১ জুলাই থেকে সাধারণ রোগী ভর্তি ও রুটিন অপারেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনা ওয়ার্ডের রেড জোন ও ইয়েলো জোনে ৩০০ শয্যার বিপরীতে বুধবার পর্যন্ত ৩৪০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ১৪০ শয্যার বিপরীতে আরও ৫-৬ জন।
এ ছাড়া চমেকে ১০টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১০টি তেই রোগী ভর্তি। একইভাবে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১৮ শয্যার মধ্যে ১৮ শয্যাতেই রোগী ভর্তি। এ ছাড়া দুই হাসপাতালের এসডিইউতে অনেক রোগী আছে যাদের আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন কিন্তু শয্যা খালি না থাকায় দেওয়া যাচ্ছে না।