স্বচ্ছতা ও জন-অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির লক্ষ্যে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পার্টিসিপাটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (প্রান)-এর উদ্যোগে এই অধিবেশনটি সুবর্ণচর উপজেলার ৮ নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাসহ প্রায় ২৮০ জন অংশ নেন।
সভায় মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গোলাম কিবরিয়া আসন্ন অর্থবছরের (২০২৫–২৬) প্রস্তাবিত ৫ কোটি ৬৮ লাখ ১২ হাজার ২০০ টাকার বাজেট উন্মোচন করেন। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের (২০২৪–২৫) বাজেট ছিল ৫ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ২০০ টাকা।
সচিব বলেন, এই বাজেটে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেচ, রাস্তা মেরামত ও খাল সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে সুষম বন্টন নিশ্চিত করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আফসার সায়মা। তিনি টেকসই উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘রিলিফ সাময়িক সহায়তা হলেও টেকসই উন্নয়ন ভবিষ্যতের জন্য স্থায়ী সুফল বয়ে আনে।’ তিনি আগামী বাজেটে খাল খনন, কালভার্ট নির্মাণ ও রাস্তা সংস্কারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। ইউএনও সুবর্ণচরের আক্তার মিয়ার হাট, চৌরাস্তা থেকে মেইন রোড, বোরহান মার্কেট ও বেড়িবাঁধ এলাকার রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা চাইবো বাজেট যেন সব এলাকায় সমানভাবে বন্টিত হয়। জলাবদ্ধতা, খাল খনন ও নিরাপদ পানির সংকট সমাধানে পরবর্তী বাজেটে বরাদ্দ প্রয়োজন।’
উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মো. সাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘মোহাম্মদপুরের নয়টি খাল অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। এগুলো পুনরুদ্ধার না করলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে। কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট প্রস্তুত করতে হবে।’
অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা ইউনিয়ন জুড়ে মোট ৪৮টি বাজার থাকা সত্ত্বেও বাজেট ঘাটতির কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সীমাবদ্ধতা থাকার কথা জানান। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় উন্নয়নের গতিকে ব্যাহত করছে বলেও উল্লেখ করা হয়।