হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

সব আসামিই জামিনে

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর নির্মাণাধীন অবস্থায় নগরীর এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) গার্ডার ধসে পড়ে। এতে ১৩ জন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়ার মামলায় ২০১৪ সালে  অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর সাত বছরেও  বিচারকাজ শেষ হয়নি। ফ্লাইওভার ট্র্যাজেডি হিসেবে আখ্যায়িত চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় আসামিরাও সবাই বাইরে।

২০১৪ সালে ১৮ জুন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটিতে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। অভিযুক্তরা সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। তখনই নির্মাণের তদারকির সঙ্গে যুক্ত চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কর্মকর্তাদের নাম প্রভাব খাটিয়ে মামলার এজাহার থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা আদালতে চার্জ গঠন থেকে শুরু করে কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। পরে সবাই জামিনে বেরিয়ে যান। সম্ভবত গত বছর লকডাউনের আগে মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা আদালত থেকে অন্য আদালতে স্থানান্তরিত হয়। তবে কোন আদালতে মামলাটি নেওয়া হয়েছে তা এখন মনে নেই। মামলাটি অনেক পুরোনো। তাই ঠিকমতো মনে করতে পারছি না।’ এমনকি এর ফাইল কোথায় আছে তা-ও বলতে পারেননি।

তবে গতকাল বিকেলে পিপির জুনিয়র আইনজীবী সাব্বির আহমেদ জানান, মামলাটিতে (দায়রা নম্বর ১০০০/১৪) রাষ্ট্রপক্ষ এ পর্যন্ত ১৮ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছেন। ২০২০ সালে মামলাটি চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়। মামলাটির পরবর্তী তারিখ ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি।

চট্টগ্রাম চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ হোসেন নথি দেখে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ মামলা ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর আমাদের আদালতে বদলি হয়ে আসে। এ মামলায় মোট ২৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হয়েছে। মামলার সব আসামিই জামিনে রয়েছেন।’ এ মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলাটি কোন আদালতে আছে তা বলতে পারছি না। সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে এ মামলার কোনো বিচার কার্যক্রম চলেনি।’

এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মামলাটি অনেক পুরোনো। অনেক ফাইল ঘেঁটে খুঁজে বের করে দেখতে হবে মামলাটি এখন কোথায় আছে। এর জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন। আমাদের নথিব্যবস্থা তো কম্পিউটারাইজড নয়।’

চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার জানামতে, এ ধরনের কোনো মামলা সিএমএম কোর্টগুলোতে স্থানান্তর করা হয়নি।’

 ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্মাণাধীন ওই ফ্লাইওভারের ১২ ও ১৩ নম্বর গার্ডার ধসে পড়ে। এতে ১৩ জন নিহত হন। তবে বেসরকারি হিসেবে এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম বাদী হয়ে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। একই বছরের ২২ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচারের জন্য পাঠান মহানগর দায়রা জজ আদালতে। ২০১৪ সালের ৩ জুন অভিযোগপত্রের ওপর নারাজি দেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। ১৮ জুন নারাজি আবেদন খারিজ করে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। ১৬ জুলাই এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী তখন বলেছিলেন, ‘আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করার আগে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির মতামত নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার কোনো মতামত নেননি। এমনকি অভিযোগপত্রে কোনো ত্রুটি আছে কি না, আদালতে উপস্থাপনের আগে খতিয়ে দেখেনি পুলিশের প্রসিকিউশন শাখাও।’

অনুসন্ধানে দেখা যায়, অভিযোগপত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার অ্যান্ড পারিশা ট্রেড সিস্টেমসের তৎকালীন প্রকল্প ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, একই প্রতিষ্ঠানের মনজুরুল ইসলাম, আবদুল জলিল, আমিনুর রহমান, আবদুল হাই, মোশাররফ হোসেন, শাহজাহান আলী ও রফিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে মামলার এজাহারে থাকা আসামি সিডিএর প্রকল্প পরিচালক এ এ এম হাবিবুর রহমান, আবদুর রাজ্জাক, এম এ মতিন, তানজিব হোসেন, সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, হোসাইন আহমেদ, শাহ জাহান, আবদুল হান্নান, আবছার হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, বাবুল কুমার বিশ্বাস, অরুণ কুমার বিশ্বাস, আবদুল খালেক মিয়া, বায়েজীদ মীর কামাল, মেজবাহুল কবির, সাইদুর রহমান, সোহেল হাছান, তৌহিদুর রহমান ও তারেক মাহমুদকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর অভিযোগ, সিডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান তদন্ত চলাকালীন এই মামলায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। 

চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে আহত যুবকের মৃত্যু

কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

‘চিকিৎসা না পেয়ে’ গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: চট্টগ্রামে ৪ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটা রীতিমতো অবান্তর: চবির উপ-উপাচার্য

ফুটপাতে দোকান চালানো নিয়ে দ্বন্দ্ব, ভাড়াটে খুনি দিয়ে হকারকে হত্যা

চট্টগ্রামে ৩ দিনব্যাপী বিজয় মেলার উদ্বোধন

সীতাকুণ্ডে পানবোঝাই পিকআপ খাদে উল্টে দুজন নিহত, আহত ১

পটিয়ায় আগুনে পুড়ল ৭ দোকান

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চট্টগ্রামে হৃদ্‌রোগবিষয়ক সম্মেলন শুরু ১৫ ডিসেম্বর