চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল কর্মী সাজ্জাদ নিহত ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) ভোরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে বাকলিয়া থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সবুজ ইসলাম মিরাজ (২৪), সাইদুল ইসলাম (২০), এমরান হোসেনসাগর (৩০), জিহান (২২), তামজিদুল ইসলাম ওরফে সাজু (৪৭), আরাফাত (২২), ওসমান (২৮) ও দিদারুল আলম রাসেল (২৪)।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ নিহত সাজ্জাদের বাবা মো. আলম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জন আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১টায় নগরের বাকলিয়া থানাধীন এক্সেস রোডের সৈয়দ শাহ রোড এলাকায় ব্যানার টানানো নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি হয়। যুবদল নেতা পরিচয় দেওয়া সোহেল ও বোরহান উদ্দিন গ্রুপের সঙ্গে নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশার অনুসারীদের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বাকলিয়া থানা-পুলিশ জানায়, গোলাগুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় যুবদল কর্মী সাজ্জাদ হোসেন মারা যান। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন আরও ১৩ জন। তাঁরা হলেন মো. পারভেজ (২০), শরীফ (২৯), রিফাত (২৫), ইউসুফ (৩০), জিসান (২২), জুয়েল (২৫), একরাম (২৩), ইব্রাহিম (২৩), শুক্কুর (২৫), ওবাইদুল (৩০), সাব্বির (২২), ফারুক (২৮) ও ফয়সাল (২০)।
তবে ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় ব্যানার টানানোসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর গুলিবর্ষণ করলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পুলিশের তথ্যে, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন (২৯), নজরুল ইসলাম সোহেল (৪২), মিল্টন (৪৪), বাদশা ওরফে ছোট বাদশা (৩০), ইউসুফ ওরফে হিরন (২৫), সবুজ ইসলাম মিরাজ (২৪), সাইদুল ইসলাম (২০), এমরান হোসেন সাগর (৩০), মোহাম্মদ দিদার (৪৫), রিয়াজ করিম (৩৩), জিহান (২২), তামজিদুল ইসলাম সাজু (৪৭), আরাফাত (২২), বোরহান (২৫), মোজাহের মেম্বার (৫০), এহতেশামুল হক ভোলা (৫০) ও নাঈম উদ্দিন (২৪)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, মামলার আসামিদের মধ্যে মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম সোহেল যুবদল নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকলেও তাঁরা গত বছর অভ্যুত্থানের আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত সোমবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনাটির সূত্রপাত বোরহান উদ্দিনের একটি ব্যানার টানানো নিয়ে। ওই ব্যানারে বোরহান নিজেকে যুবদল নেতা পরিচয় দিয়ে চসিক মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেনের ছবি যুক্ত করেছিলেন।
একই মামলায় এহতেশামুল হক ভোলা (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যিনি সারা দেশে আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
ভোলার বিরুদ্ধে মিতু হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তোলে পুলিশ। তবে ভোলা এসব অস্বীকার করেছেন।