কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সিগন্যালের ভুলে ট্রেন দুর্ঘটনায় সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে ধারণা করছে রেলওয়ে থানা-পুলিশ। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক হাসানপুর স্টেশনমাস্টার সোহাগ।
আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলস্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান মেহেবুব জানান, উপজেলার হাসানপুর রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ৭২৭ নম্বর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে পড়ে। এ সময় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং মালবাহী ট্রেনের পেছনের বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পার্শ্ববর্তী লাকসামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও আরও জানান, আহতদের উদ্ধারে সহযোগিতা করে নাঙ্গলকোট থানা-পুলিশ, লাকসাম ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এবং লাকসাম জিআরপি থানা-পুলিশ।
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় হাসানপুর স্টেশনমাস্টার সোহাগসহ অন্যরা পালিয়ে যান। রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের স্টেশনে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, হাসানপুর স্টেশনমাস্টারের দায়িত্ব অবহেলায় নির্দিষ্ট সময়ে সোনার বাংলা ট্রেনের ২ নম্বর লাইনের সিগন্যাল পয়েন্ট ঠিক করতে দেরি হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন আলমগীর বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ট্রেনের সাতটি বগি দুমড়েমুচড়ে গেছে। ঘটনার পরপরই স্টেশনমাস্টার সোহাগসহ অনেক কর্মকর্তা পালিয়ে যান। আমরা প্রশাসনসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে আহতদের উদ্ধার করে আশপাশের হাসপাতালগুলোতে পাঠাই।’
মৌকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন আলমগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সোনার বাংলার সাতটি বগি দুমড়েমুচড়ে লাইনচ্যুত হয়। এ সময় রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তাকে সেখানে দেখা যায়নি। স্টেশনমাস্টার সোহাগও কর্মস্থল থেকে পালিয়েছেন। পরে আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করি।’
ইউএনও রায়হান মেহেবুব বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রেলস্টেশনে অবস্থান করছি। এ পর্যন্ত নিহতের খবর পাওয়া যায়নি। অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ঢালুয়ার একটি ফার্মেসি প্রায় ২০ জন যাত্রী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত অন্যদের উদ্ধার করে লাকসাম ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।’