বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লংপংপাড়া ও বুচিডংপাড়া এলাকায় আরাকান আর্মি ও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)-রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাংলাদেশের সীমান্ত পিলার ৫৫ ও ৫৬-এর মধ্যবর্তী শূন্য লাইনের লংপংপাড়া-বুচিডংপাড়া এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। ভোর থেকে ফায়ারের শব্দে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে।
ইয়াংরিংপাড়ার লোকজন জানান, সীমান্তের ওপারে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন। গোলাগুলির শব্দে মনে হচ্ছে, যেকোনো মুহূর্তে গুলি এপারে এসে পড়তে পারে। গুলির শব্দের কারণে পারতপক্ষে এলাকার মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, অন্যদিকে নিজেদের কৃষিজমিতে কাজেও যেতে পারছেন না।
কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, সীমান্তের ওপারে এখনো আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ বজায় রয়েছে। তবে আরসা, আরএসও এবং স্থানীয় কিছু গোষ্ঠী মিলে আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ করছে, ফলে সীমান্তবর্তী ম্রোরা ভয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
রামু ব্যাটালিয়ন (৩০ বিজিবি) সূত্র জানায়, এ ব্যাটালিয়নের অধীনে পোয়ামুহুরী বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৫৫ ও ৫৬-এর মধ্যবর্তী স্থানে শূন্য লাইন থেকে মিয়ানমারের ভেতরে লংপংপাড়া নামের স্থানে এবং বুচিডং বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৫৫ থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও আরসা-আরএসওর মধ্যে গোলাগুলি চলমান রয়েছে।
আরও জানা যায়, সংঘাতের পর সীমান্ত এলাকায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমান্তের সব বিওপিকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে বিজিবি। পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে, যাতে হঠাৎ কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
রামু ব্যাটালিয়ন (৩০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্ত পিলার ৫৫ ও ৫৬-এর মাঝামাঝি জিরো পয়েন্ট থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লংপংপাড়া এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলেও হতাহতের সুনির্দিষ্ট খবর পাওয়া যায়নি। বিজিবি সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।