ভোলা শহরের নতুনবাজারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পৌরসভার অন্তত ২০ কর্মচারী আহত হন। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আজ শনিবার বিকেলে নতুনবাজার এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট ও তার আশপাশে অভিযান চালানোর সময় হকার ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় পৌরসভার তিনটি পিকআপ ভ্যানে অগ্নিসংযোগ করেছে হামলাকারীরা।
পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. ওমর ফারুক বলেন, নতুনবাজার এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও হকাররা পৌরসভার জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। বহুবার নোটিশ দেওয়ার পরেও তাঁরা তাঁদের স্থাপনা সরিয়ে নেননি। নোটিশের সর্বশেষ তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার বেশ কয়েক দিন পর আজ বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের লোকজন ও হকাররা বিকেলে পৌরসভার কর্মীদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা পৌরসভার তিনটি ময়লা বহনকারী পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেন।
পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. শরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযান চালানোর প্রায় শেষ মুহূর্তে বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের লোকজন ও হকাররা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমিসহ অন্তত ২০ জন আহত হই। হামলাকারীরা পৌরসভার তিনটি ময়লা বহনকারী পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী পৌরসভার পিকআপ ভ্যানে আগুন জ্বলছিল। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’ ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে এ হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী শরিফ। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। বরং আমাদের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের ব্যবসায়ীদের দোকান ভেঙে ফেলেছে পৌরসভার লোকজন।’
এ বিষয়ে পৌর প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা গত ৮-১০ দিন ধরে পৌর এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছিলাম। আজ শনিবার ছিল এ অভিযানের শেষ দিন। যারা অবৈধভাবে পৌরসভার স্থাপনা দখল করেছিল, তারাই শেষ মুহূর্তে ময়লা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।’ এতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে—তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌরসভার ইঞ্জিনিয়াররা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।