পিরোজপুর জেলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ডাকা মিটিংয়ে তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ৩টার দিকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হন তাঁরা।
অভিযোগ ওঠা তিন কর্মচারী হলেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. বায়জিদ সেখ, হিসাবরক্ষক শিল্পী রানী ও হোস্টেল হাউসকিপার তাহরিমা।
শিক্ষার্থীরা জানান, তিন কর্মচারী মিলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে জেলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের পরিবেশ নষ্ট করছে। এখানে ভর্তির সময়ে শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র ত্রুটি দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. বায়জিদ সেখ, হিসাবরক্ষক শিল্পী রানী এবং হোস্টেল হাউসকিপার তাহরিমা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ট্রান্সফারের সময়ে ইচ্ছামতো টাকা দাবি করে শিক্ষার্থীদের থেকে হাতিয়ে নেন।
এ ছাড়া চুক্তিভিত্তিক অফিস সহায়কদের স্বাক্ষর নিয়ে তাঁদের সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন তাঁরা। এ ছাড়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তাঁরা সরিয়েছেন বলেও অভিযোগ। এ অবস্থায় তাঁদের পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বলেন, ‘নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হবে। ভর্তির সময় শেষের দিকে তড়িঘড়ি করে শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র দিতে বলে এবং সেখানে ত্রুটি ধরে তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। আমাদের রান্নার বুয়াদের বেতনশিটে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে তাঁদের টাকা হাতিয়ে নেয়। মাইগ্রেশনের ক্ষেত্রেও তারা অনেক টাকা দাবি করে তুলে নেয়। আমরা কোনো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চাই না।’
শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. বায়জিদ সেখ, হিসাবরক্ষক শিল্পী রানী ও হোস্টেল হাউসকিপার তাহরিমা নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে। আমরা অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয় হয়নি। আমরা অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ চাই।’
শিক্ষার্থী জান্নাত ইসলাম বলেন, ‘আমরা ওনাদের তিনজনের পদত্যাগ চাই। তাঁরা ভর্তি ও মাইগ্রেশনের সময়ে নানা অজুহাত দেখিয়ে আমাদের থেকে টাকা নিয়ে থাকেন। আজকের আন্দোলনের কোনো প্রভাব যদি আমাদের একাডেমিক জীবন এবং আবাসিক ক্ষেত্র পড়ে, তাহলে এর সব দায় আমাদের শিক্ষকদের ও কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।’
জেলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ বেবী রানী রায় বলেন, ‘এক মাস আগে আমরা একটি মিটিং করেছিলাম, তবে নানা কারণে আমরা এ বিষয়ে বসতে পারিনি। আজকে ওরা যখন আমাকে বলেছে সবাইকে নিয়ে বসতে হবে, তখন আমি মিটিং ডাকি এবং ওদের নিয়ে বসি। ওরা (শিক্ষার্থীরা) আমাকে কয়েকজনের কাগজ দেখিয়েছে, আমরা তাদের ডাকব। যদি প্রমাণ হয় তাহলে আমরা অফিশিয়ালি মীমাংসা করব আর মীমাংসা না হলে অফিশিয়ালি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’