বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। চলতি বছর বরগুনায় আট হাজারেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ১২ জন। সরকারি হিসাবে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছে ১৪ জন। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। এখন পর্যন্ত জেলায় ৫৮ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
গত মাসে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও চলতি মাসে ফের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, ডেঙ্গুর প্রকোপের শুরুতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে এডিস মশা নিধনে ঢিলেঢালাভাবে কিছু কর্মসূচি পরিচালিত হলেও বর্তমানে সেটাও বন্ধ রয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন রোগী। এদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ৪৭ জন, পাথরঘাটায় ১২, বামনায় দুই ও তালতলীতে তিনজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে জেলায় চিকিৎসা নিচ্ছে ১৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী। আর এ বছর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছে ৭ হাজার ৮৭৮ জন।
বরগুনা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, ফের ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এডিস মশার বিস্তার রোধে পৌরসভা কিংবা জেলা প্রশাসন কারও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। মশার উৎপত্তি ধ্বংস করতে না পারলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমানো অসম্ভব।
সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ‘জেলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও নার্সরা তাঁদের সাধ্যমতো সেবা দিচ্ছেন। ডেঙ্গুর হটস্পট হওয়ায় এ জেলায় অনেক চিকিৎসক ও নার্সদের পদায়ন করা হয়েছে। একা স্বাস্থ্য বিভাগ ডেঙ্গু আক্রান্তের হার কমাতে পারে না। সরকারি, বেসরকারি সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে মশার বিস্তার রোধে এগিয়ে না এলে হাজারো চেষ্টা করা হলেও প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব নয়।’