হোম > সারা দেশ > বরগুনা

বরগুনায় টোলের নামে সড়কে চাঁদাবাজি

বরগুনা প্রতিনিধি

আদালত ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশ উপেক্ষা করে বরগুনা পৌরসভায় যানবাহন থেকে টোলের নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। চালকদের অভিযোগ, নির্ধারিত হারে চাঁদা না দিলে হুমকি, মারধর, এমনকি গাড়িও আটকে রাখা হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, বরগুনা শহরের প্রবেশপথ ক্রোক ব্রিজ, পৌর বাস টার্মিনাল ও সোনাখালী এলাকায় প্রকাশ্যে সব ধরনের যাত্রী এবং পণ্যবাহী যানবাহন থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। অটোরিকশা কিংবা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলচালকেরাও চাঁদা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।

যানবাহনের চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে ১০ টাকা, সিএনজিচালিত ও মাহিন্দ্রা অটোরিকশা থেকে ২০ টাকা, ট্রাক ও বাস থেকে ২০০, পিকআপ ভ্যান থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়।

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর থেকে পণ্য নিয়ে বরগুনায় আসা একাধিক ট্রাকচালক ও তাঁদের সহকারী জানান, খুলনা ও বাগেরহাটের ভেতর দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এলেও সড়কের কোথাও চাঁদা দিতে হয় না। কিন্তু বরগুনা পৌরসভায় ঢোকার আগেই তাঁদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করা হয়।

টোল আদায় করার জন্য পৌরসভা থেকে ইজারা নেওয়া সাগর জমাদ্দার বলেন, ‘পৌরসভা মোট তিনবার দরপত্র আহ্বান করে। এর মধ্যে তৃতীয়বারের সময় আমরা ইজারা পেয়েছি।’

জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল বরগুনা জেলার সব সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহনের কাছ থেকে টোল আদায় বন্ধের নির্দেশ দেন আদালত। বরগুনার দ্রুত বিচার আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহ্ এই আদেশ দেন। বেতাগী উপজেলার টেম্পোস্ট্যান্ডের ইজারাদার মো. খোকন হাওলাদার বরগুনার দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, তিনি টেম্পোস্ট্যান্ড ইজারা নিলেও টোল আদায় করতে পারছেন না। জোর করে অন্যরা টোল আদায় করছেন।

আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সড়ক থেকে টাকা আদায় বন্ধের নির্দেশ দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখা। এর আগেও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ টার্মিনাল ছাড়া সব সড়ক ও মহাসড়ক থেকে টোলের নামে চাঁদা আদায় বন্ধের নির্দেশনা দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুস সাকিব বলেন, বরগুনা পৌরসভায় বিভিন্ন সড়ক থেকে টোলের নামে যে টাকা আদায় করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ চাঁদাবাজি এবং আদালতের আদেশের পরিপন্থী।

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. নুরুল আমিন বলেন, টার্মিনাল যদি না থাকে, তাহলে সেখানে অস্থায়ী টার্মিনাল ব্যবহৃত হবে। তবে কোনো অবকাঠামো বা সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে নিজেরা ঘোষণা দিয়ে সেখানে কোনো টাকা নেওয়া যাবে না।

বরগুনা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, টাকা অবৈধভাবে আদায়ের কারণে পরিবহন ব্যয় ও ভোগান্তি বেড়েছে।

বরগুনা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যে ইজারা দিয়েছি, এ ব্যাপারে আপনাদের অনেক তথ্য দিয়েছি। তথ্য দিতে দিতে বিষয়টি এখন শেষ পর্যায়ে গেছে। এটা নিয়ে আবার সমস্যা হইছে কী? আমরা বাসস্ট্যান্ড ইজারা দিয়েছি। ক্রোক ব্রিজ ও সোনাখালী—এই দুই প্রান্তে বসে টাকা ওঠানো হয়।’

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘যদি এটি করা হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই অন্যায় এবং একটি বিধিবহির্ভূত কাজ। বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। তাঁরা যেন এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকেন, তা আমরা দেখভাল করব।’

বরগুনায় বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ সব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

তিন দপ্তর ‘ম্যানেজ’ করে দেদার চলছে জাটকা শিকার

গাছ নিধন: দস্যু ও কর্মকর্তার যোগসাজশ

বিএনপি নেতা সুজন মল্লিকের মায়ের ইন্তেকাল

মানুষ এবার ইসলামি দলকে ক্ষমতায় দেখার অপেক্ষায়: চরমোনাই পীর

সিমেন্ট নয়, বালু দিয়ে জিও ব্যাগ বোঝাই

বেতাগীতে বাস মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে একজন নিহত

বরগুনায় ‘সর্বাত্মক শাটডাউন’ লিখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তালা, পুলিশ বলছে—অভ্যন্তরীণ কোন্দল

সিডরের ১৮ বছর: উপকূলবাসী এখনো ভুগছে

গরুকে ঘাস খাওয়ানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১২