উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় পৌঁছে গেছে। আজ রোববার বেলা ৩টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে ডিমলা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানি বাড়তে থাকায় তিস্তাপাড়ের মানুষ আরও বড় মাত্রায় বন্যার আশঙ্কা করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, আজ সকাল থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সকাল ৯টায় পানির প্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমা (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) থেকে ৬৭ সেন্টিমিটার নিচে। দুপুর ১২টায় তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৫২ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বেলা ৩টায় এ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটার; যা বিপৎসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানিপ্রবাহ এখনো বাড়ছে, ফলে যেকোনো মুহূর্তে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাউবো।
তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার ডিমলা উপজেলার নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে আমন ফসলের খেত এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকটি চরের যোগাযোগব্যবস্থা। কিসামত চরের বাসিন্দা শাহিন আলম বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়লেই তিস্তার প্রায় ২২টি চরাঞ্চলের মানুষ বন্দী হয়ে পড়ে। তবে এবার যেভাবে পানি বাড়ছে, এতে আমরা বড় বন্যার আশঙ্কা করছি।’ ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চলে ইতিমধ্যে পানি ঢুকে পড়ায় মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।
ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ঢল সামাল দিতে ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’