গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় (জিএসটি) উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন যশোরের মেধাবী শিক্ষার্থী মীম আখতার শিখা। তবে তাঁর ভুলের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে। ফলে স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আশা অধরাই থেকে গেল এই দরিদ্র পরিবারের মেয়েটির।
মীম আখতার যশোর সদর উপজেলার তপস্বীডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবা আসাদুল বিশ্বাস একজন ভ্যানচালক। পরিবারে তিন সন্তানের পড়ালেখার খরচ বহন করেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মিম আখতার শিখা বলেন, ‘আমার বাবা রিকশাচালক। আমরা তিন ভাই-বোন পড়ালেখা করি। বাবা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। অনেক কষ্টে ধার করে ৫ হাজার টাকা জোগাড় করে গত ৩০ জুন অনলাইনে ভর্তির ফি পরিশোধ করি। নোটিশ ছিল ১/৭/২৫ তারিখে ভর্তির কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আমি মনে করেছি ১ থেকে ৭ তারিখের ভেতরে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আমি ভুল বুঝতে পেরে ৩ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাগজপত্র জমা দিতে যাই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকায় জমা দিতে পারিনি। আবেদনে আমি গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিজম ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে চয়েস দিয়েছিলাম। এ জন্য ৭ জুলাই সেখানে যাই। গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার কাগজপত্র জমা নেয়নি। আমি বুঝতে পারছি না এখন কী করব। সুযোগ পেয়েও স্বপ্নপূরণ অধরাই থেকে গেল।’
কী বলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ?
গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের বাইরে কেউ এলে আমাদের কিছু করার থাকে না। অটোমেটিক সিস্টেমে তার সিট মুছে গিয়ে অন্য কেউ ভর্তি হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়া হয়। যেহেতু সে যশোরে ছিল, সেহেতু যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করাই উচিত ছিল।’
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএসটি ভর্তি কমিটির চিফ কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার বলেন, ‘নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে অন্য শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে যায়। সবকিছু অনলাইনে হওয়ায় আমাদের কিছু করার থাকে না।’
জিএসটি ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিম আখন্দ বলেন, ‘সফটওয়্যারভিত্তিক ভর্তি পদ্ধতিতে সময়মতো কেউ ভর্তি না হলে সেই সিটে অন্য কেউ মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ভর্তি হয়ে যায়। নিয়মের বাইরে গেলে পুরো সিস্টেম ভেঙে পড়বে। ফলে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে ভর্তির সুযোগ নেই।’
আরও খবর পড়ুন: