হোম > বিশ্লেষণ

গ্যাস নিয়ে রাশিয়ার পৌষ মাস, ইউরোপের সর্বনাশ

ইউরোপ যখন ভয়াবহ গ্যাস-সংকটে ধুঁকছে, ঠিক তখনই দৈনিক লাখ লাখ ডলারের গ্যাস পুড়িয়ে নষ্ট করছে রাশিয়া। ফিনল্যান্ডের সীমান্তের অদূরে রাশিয়ার পোর্টোভায়া গ্যাস কারখানায় কয়েক মাস ধরে দৈনিক অন্তত ৪০ লাখ ৩৪ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস পোড়ানোর প্রমাণ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপে, বিশেষত জার্মানিতে যে গ্যাস রপ্তানি করা যাচ্ছে না, বাধ্য হয়ে তা পুড়িয়ে ফেলছে মস্কো।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নরওয়ের রিস্ট্যাড এনার্জি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি বিভিন্ন স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে দেখেছে, মস্কো দৈনিক যে পরিমাণ গ্যাস পোড়াচ্ছে, তার মূল্য প্রায় এক কোটি ডলার। ‘নর্ড স্ট্রিম-১’ পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আসত, সরবরাহ কমে যাওয়ায় জমে যাওয়া গ্যাস পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। চলতি গ্রীষ্মের শুরু থেকে রাশিয়া উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের পোর্টোভায়ায় গ্যাস পোড়ানো শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যাটেলাইট বিশেষজ্ঞ জেসিকা ম্যাককার্টি বলেন, ‘যে কারখানা থেকে গ্যাস পোড়ানোর উজ্জ্বল শিখা দূর থেকে দেখা যাচ্ছে, তার কাছাকাছি রয়েছে নর্ড স্ট্রিম-১ গ্যাস প্রক্রিয়াজাত স্টেশন। যেহেতু জার্মানিতে গ্যাস রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে, তাই বাধ্য হয়ে তাদের সেসব গ্যাস পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে। কারণ, গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করার এসব কারখানা বেশ স্পর্শকাতর, তা চাইলেই ঝটপট করে বন্ধ করা ঝুঁকিপূর্ণ। জুন থেকে শুরু হওয়া গ্যাস পোড়ানোর পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে।’

রাশিয়ার গ্যাস পোড়ার কারণ সম্পর্কে ফিনল্যান্ডের এলইউটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসা ভাকিলাইনেন বলেন, পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরঞ্জাম-সংকটে পড়েছে। গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করার জন্য উচ্চমানের কিছু বাতি লাগে, যা নিষেধাজ্ঞার কারণে এ মুহূর্তে রাশিয়া কিনতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়ে তাদের স্টেশনের বাড়তি গ্যাস পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে।

রাশিয়ার এত বেশি পরিমাণ গ্যাস পোড়ানো পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ বরফে ঢাকা পার্শ্ববর্তী আর্টিক অঞ্চল এতে বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন হামলার পর জবাবে রাশিয়ার ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। জবাবে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহে কড়াকড়ি আরোপ করে মস্কো। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনে দেশটি। এ পাইপলাইন দিয়ে জার্মানিতে রাশিয়ার সিংহভাগ গ্যাস যায়। জার্মানির চাহিদার মোট এলএনজির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে।

নিষেধাজ্ঞার জবাবে মে মাস থেকে ‘শত্রু’ দেশগুলোর সঙ্গে লেনদেনের জন্য ডলারের পরিবর্তে নিজেদের মুদ্রা রুবলে করার শর্ত বেঁধে দেয় রাশিয়া। রুবলে গ্যাস ও অন্য রুশ পণ্যের দাম মেটানো নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। গত মাসে ব্লকটি রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। কিন্তু ইতালি, হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়াসহ ইইউর আরও কিছু দেশ রুবলের মাধ্যমে রুশ গ্যাস কেনা অব্যাহত রেখেছে।

‘ডেথ সেলে’ ইমরান খান—ক্রিকেট বিশ্বের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইরান ও ইসরায়েলে সমানতালে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি

পাকিস্তানকে এফ-১৬ আধুনিকীকরণের প্যাকেজ, ভারতকে কী বার্তা দিতে চান ট্রাম্প

ডার্ক ফ্লিট: নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেভাবে চলে ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল পাচার

এআই চাকরি কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকায়, কিন্তু নিয়োগ বাড়াচ্ছে ভারতে—কীভাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ না সম্ভাবনা

শত বছর আগে জাপানের কাছে হারের বদলা চান সি চিন পিং!

কোন দেশে সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য সর্বাধিক, বাংলাদেশের চিত্র কেমন

যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা দক্ষ ইতালির জঙ্গি বিমান ইউরোফাইটার টাইফুন

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত থামেনি, ট্রাম্প ‘থামিয়েছেন’ দাবি করা অন্য যুদ্ধগুলোর কী অবস্থা