হোম > বিশ্লেষণ

কূটনীতির খেলায় এক পুতিনেই কাহিল যুক্তরাষ্ট্র

২০ বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাজনীতিতে আসার আগে সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট দলের বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর রাজনৈতিক জীবনও বেশ দীর্ঘ। তিনি প্রথমবার সিনেটর নির্বাচন হন ১৯৭৩ সালে।

দেশ তো বটেই, বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়েও তাঁদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, যা সম্পূর্ণ আলাদা। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ব্যক্তিস্বাধীনতা ইত্যাদির আড়ালে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা দেশগুলো দেশে দেশে অপ্রত্যক্ষভাবে হস্তক্ষেপ চালায়। ভিনদেশে রাশিয়া বা চীনের হস্তক্ষেপের ধরনই আলাদা। ইউক্রেন নিয়ে চলমান সংকট দেশ দুটির নেতাদের বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির সমস্যার অংশ বলে মনে করেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।

সিএনএনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, বাইডেন যখন প্রথমবার সিনেটর নির্বাচিত হন, তখন স্নায়ুযুদ্ধে উত্তপ্ত বিশ্ব। তখন থেকেই তাঁকে রাশিয়াকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক জীবনের শেষের অধ্যায়ে পৌঁছলেও, তিনি রাশিয়ার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে।

অন্যদিকে ন্যাটো সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের মধ্যে অত্যন্ত সফলভাবে বিভেদ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন পুতিন। আগের কথা বাদ দিয়ে ২০১৬ সালের কথা ধরা যাক। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠল, তখন দেশটির রাজনীতিবিদদের অত্যন্ত বিভ্রান্ত মনে হয়েছে।

ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো কোনো মার্কিন রক্ষণশীল গণমাধ্যম পুতিনের এতটাই প্রশংসা করছে, যা অনেকটা পুতিনের বিজয় হিসেবে দেখা যায়। অন্যদিকে দু-এক দিন ধরে বাইডেন ও তাঁর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ‘শিগগির রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে’ এমন কথা বলতে দেখা যাচ্ছে না। এটাও বাইডেন প্রশাসনের আরেকটা পরাজয়।

অর্থাৎ তাঁরা তাঁদের অবস্থানে স্থির থাকতে পারছেন না। বোঝে উঠতে পারছেন না পুতিন আসলে কী চান। কিন্তু দ্য প্রিন্টের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, পুতিন কী চান, তা স্পষ্ট। ডিসেম্বরে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রাশিয়া যে দুটি খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে রাশিয়ার দাবি স্পষ্ট।

সমস্যা হলো, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর গ্রহণযোগ্যতা আগের মতো ধরে রাখতে চায়। কিন্তু তা প্রায় অসম্ভব। বিশেষত, ন্যাটোর আফগানিস্তান অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর তা আরও জোরদার হয়েছে। এ অবস্থায় ইউরোপের মিত্রদের ধরে রাখতে হলে, তাদের ভয় দেখানো ছাড়া বিকল্প নেই। তাই রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার জুজু দিয়ে ইউরোপকে হাতে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ভারতকে একঘরে করতে দক্ষিণ এশিয়ায় নয়া জোটের সন্ধানে পাকিস্তান, সফল হবে কি

পুতিন জানেন—ইউক্রেনের ‘সময় ফুরিয়ে আসছে’, যুদ্ধ শেষের তাড়া নেই

দোনেৎস্ক: শান্তি-আলোচনার টেবিলে পুতিন-জেলেনস্কির অন্তিম বাধা, এর গুরুত্ব কতটা

কী হবে, যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ কেড়ে নেওয়া হয়

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

পুতিন-মোদির আসন্ন বৈঠকের মূলে কী আছে

শাহেনশাহ-ই-পাকিস্তান: আসিম মুনিরের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার স্বপ্ন কি তাসের ঘর

যে ইমরান খানকে আমি চিনতাম—শশী থারুরের স্মৃতিকথায় আশঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার উত্তেজনায় রাশিয়া ও চীন কেন নীরব

দুবাইয়ে তেজস দুর্ঘটনা: সামনে আসছে ভারতের যুদ্ধবিমান কর্মসূচির পুরোনো দুর্বলতা