হোম > নারী

নারীর বৈতনিক ও অবৈতনিক কর্মঘণ্টা কত

ফিচার ডেস্ক

ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো উন্নত দেশগুলোতে, নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি হারে খণ্ডকালীন কাজ করেন। এর ফলে, গড়ে তাঁদের প্রতি সপ্তাহে বেতনভুক্ত কাজের সময় পুরুষের তুলনায় কম হয়। তবে এটি কোনো আইনের কারণে হয়নি। আইন দিয়ে যা করা হয়েছে, তা আফগানিস্তানে। সেটি অবশ্য নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা নয়, বরং নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ২৮ শতাংশ কর্মজীবী ​​নারী খণ্ডকালীন কাজ করেন। যেখানে পুরুষের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৮ শতাংশ। সেই পরিসংখ্যান থেকে হিসাব করলে বলা যায়, নারীদের কর্মঘণ্টা কম। তবে তা লৈঙ্গিক হিসাবের কারণে নয়। এই পার্থক্যের প্রধান কারণ হলো সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্যগত লৈঙ্গিক ভূমিকা। সমাজ ও পরিবারে যত্নের দায়িত্ব নারীদের ওপর বর্তানোর কারণে কর্মক্ষেত্রে নারীরা নমনীয়তা বা কম সময়ের কাজের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। এ ছাড়া করকাঠামো এবং শ্রমবাজারের নীতিগুলোও নারী ও পুরুষের কাজের সিদ্ধান্তকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যে মহাদেশ বা অঞ্চলে শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ও পারিবারিক দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে সামগ্রিকভাবে উভয় লিঙ্গের জন্যই কম বেতনভুক্ত কাজের সময় দেখা যায়।

এশিয়ার কিছু দেশ; যেমন ঐতিহাসিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া বা বড় অনানুষ্ঠানিক খাত রয়েছে এমন দেশগুলোতে, পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য খুব উচ্চ বার্ষিক বেতনভুক্ত কাজের হার দেখা যায়। ফ্রান্স, ডেনমার্ক বা নরওয়ের মতো কিছু ইউরোপীয় দেশে সাধারণত পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৩৯ কর্মঘণ্টা প্রচলিত। তবে নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে নারী কর্মীদের একটি বড় অংশ প্রতি সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টার কম কাজ করেন। উত্তর আমেরিকায়; যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পূর্ণকালীন কর্মরত নারীরা পুরুষদের তুলনায় গড়ে দৈনিক সামান্য কম ঘণ্টা কাজ করেন। যেমন নারীদের জন্য প্রতিদিন ৭ দশমিক ৯ ঘণ্টা এবং পুরুষদের জন্য ৮ দশমিক ৪ ঘণ্টা প্রচলিত আছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশ্বজুড়ে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি সময় অবৈতনিক কাজে; যেমন গৃহস্থালি, সন্তান ও আত্মীয়দের যত্নের পেছনে ব্যয় করেন। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের তথ্যের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৭৪৮ মিলিয়ন মানুষ পরিচর্যার দায়িত্বের কারণে শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০৮ মিলিয়ন নারী। এতে অঞ্চলভিত্তিক; যেমন উত্তর আফ্রিকা, আরব রাষ্ট্র, ইউরোপের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, গড়ে পুরুষদের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই গুণ বেশি সময় ঘরোয়া ও পরিচর্যার কাজে সময় ব্যয় করেন নারীরা। যখন এই অবৈতনিক সময়কে বেতনভুক্ত কাজের সময়ের সঙ্গে যোগ করা হয়, তখন দেখা যায়, নারীরা পুরুষের চেয়ে সামগ্রিকভাবে বেশি ঘণ্টা কাজ করেন। তবে সেই কর্মঘণ্টার কোনো অর্থমূল্য হয় না। হোক তা ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা কিংবা এশিয়া।

কাজের সময়ের এই লৈঙ্গিকভিত্তিক পার্থক্য মূলত নারীর ওপর অবৈতনিক যত্নের কাজের অস্বাভাবিক বোঝা এবং সামাজিক প্রত্যাশার ফল, যা তাঁদের বেতনভুক্ত কাজের ধরনকে প্রভাবিত করে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মন্ত্রণালয় ও সংসদে আসনের দাবি

জটিল প্রক্রিয়ার কারণে অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করতে পারেন না নারীরা

ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে শাহেলীর লড়াই

১১ মাসে নির্যাতনের শিকার ২,৫৪৯ নারী ও কন্যাশিশু

শুধু চিঠিতে তালাক লিখে দিলেই তালাক সম্পূর্ণ হয় না

আন্তর্জাতিক নারী: দেয়ালবন্দী জীবনেও প্রতিরোধের প্রদীপ

শান্তির পক্ষে স্যালি লিলিয়েন্থাল

রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ বলা রাবি শিক্ষকের অপসারণ চায় মহিলা পরিষদ

ল্যানসেটের গবেষণা: শৈশবে ১০০ কোটি মানুষ যৌন সহিংসতার শিকার

মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জীবনের গল্প