লিনসয়েস মারেনিসিস জাতীয় উদ্যানে হাজির হলে একে আশ্চর্য সুন্দর এক স্বপ্ন ভেবে গায়ে একটা চিমটি কাটতেই পারেন। বালুর রাজ্যে একটু পরপরই এখানে ছেদ টেনে গেছে একটার পর একটা সবুজ কিংবা নীল হ্রদ। এটা কি মরুভূমি নাকি হ্রদের এক রাজ্য ভেবে ধন্দে পড়বেন। তবে বালিয়াড়ি আর হ্রদ মিলেমিশে যে রীতিমতো অপার্থিব এক সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে, তা অস্বীকার করতে পারবেন না কোনোভাবেই।
ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মারাইনোতে অবস্থান ৫৯৮ বর্গমাইল আয়তনের জাতীয় উদ্যানটির। প্রথম দেখায় জায়গাটিকে একটি মরুভূমি বলে মনে করেন, তবে দোষ দেওয়া যাবে না আপনাকে। তবে একে সে অর্থে মরুভূমি বলতে পারবেন না আপনি। এখানকার বালিয়াড়িগুলোর মাঝখানে লুকিয়ে আছে আশ্চর্য সুন্দর সব ল্যাগুন বা হ্রদ। কাছাকাছি গেলেই পরিষ্কার হবে বিষয়টা। এ ধরনের ল্যাগুনের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আর এখানকার কোনো কোনো বালিয়াড়ির উচ্চতা ৫০ ফুটেরও বেশি। তাই কখনো কখনো বালিয়াড়ির কারণে দূর থেকে হ্রদগুলো ঠাহর না-ও করতে পারেন।
এবার বরং জাতীয় উদ্যানটি এর নাম কীভাবে পেল তা জেনে নেওয়া যাক। পর্তুগিজ শব্দ লিনসয়েসের অর্থ বিছানার চাদর। সে হিসেবে এর নামের অর্থ মারাইনোর বিছানার চাদর। নিশ্চয় কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না এমন নামের। আকাশ থেকে কিংবা ড্রোনে জায়গাটিকে দেখলে তবেই বুঝতে পারবেন বিষয়টি। মনে হয় যেন একটার পর একটা চাদর ফেলে রাখা হয়েছে জলার বুকে।
তবে আশ্চর্য সুন্দর এই বালু-জলময় রাজ্যে যাওয়াটা খুব সহজ কাজ নয়। প্রথমে উড়োজাহাজে করে সাও পাওলোর মারেশাও কুইয়া মাশাডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়ে যাবেন। সেখান থেকে প্রতিদিন চারবার বাস ছাড়ে নদীতীরের ছোট্ট শহর বাহেইরিয়াস। সময় লাগে ঘণ্টা পাঁচেক। এই শহরটিকে বলতে পারতেন জাতীয় উদ্যানটির প্রধান প্রবেশদ্বার। আবার সাও লুইস থেকে গাড়িতে পৌঁছাতে পারবেন সান্তো আমারোয়। সেখান থেকেও পার্কটিতে যাওয়া যায়।
জাতীয় উদ্যানটির কোনো কোনো ল্যাগুন বিশাল। লাগোয়া বনিতা কিংবা লাগোয়া আজুয়ার অবস্থান বাহেইরিয়াস শহরের কাছে। আতিনস গ্রামের কাছে অবস্থিত লাগোয়া ট্রপিক্যালও দেখার মতো জায়গা। লাগোয়া দ্য গাইভোতা (সিগ্যাল ল্যাগুন) পার্কের সবচেয়ে বড় এবং সুন্দর হ্রদগুলোর একটি।
সূত্র: সিএনএন, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, আনইউজাল প্লেসেস