ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানো থেকে মাত্র ১ রানের অপেক্ষা যেন কিছুতেই ফুরোচ্ছিল না মুশফিকুর রহিমের। শুধু মুশফিকের কেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকেরাও যে এই মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে বাংলাদেশের ইনিংসের ৯২তম ওভারে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন মুশফিক।
মিরপুরে গতকাল খেলতে নেমেই ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন মুশফিক। বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটা তাঁর শততম টেস্ট। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম দিনে সেঞ্চুরি প্রায় করেই ফেলেছিলেন মুশফিক। ৯০ ওভার শেষে ৯৯ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিকের সেঞ্চুরির জন্য হয়তোবা দিনের খেলা বাড়িয়ে নেওয়ার কথাবার্তাই চলছিল। আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম ওভারটা যখন আয়ারল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিজ করতে আসেন, সেই ওভারে কোনো রান নিতে পারলেন না মুশফিক। এমনকি কয়েকবার আউট হতে হতেও বেঁচে গিয়েছেন তিনি।
হামফ্রিজের সেই ওভারের পরই ফুরিয়েছে মুশফিকের অপেক্ষা। ৯২তম ওভারের তৃতীয় বলে জর্ডান নিলকে স্কয়ার লেগে ঠেলে সিঙ্গেল নেওয়ার মুশফিক হেলমেটটা খুললেন। মিরপুর শেরেবাংলার গ্যালারিতে তখন মুহুর্মুহু করতালির আওয়াজ। শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার পিচে সিজদা দিলেন। ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি।
টেস্টের সেঞ্চুরির ম্যাচে সেঞ্চুরি করার কীর্তি রয়েছে গর্ডন গ্রিনিজ, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিংয়ের মতো কিংবদন্তিদের। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে শততম ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন মাইকেল কলিন কাউড্রে। ১৯৬৮ সালে এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজে শততম টেস্টে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন কাউড্রে।
শততম টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটার রিকি পন্টিং। ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১২০ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি এখন পর্যন্ত করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও জো রুট। সর্বোচ্চ ২১৮ রানের ইনিংস ২০২১ সালে চেন্নাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন রুট।
শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন যাঁরা
দল প্রতিপক্ষ সাল
কলিন কাউড্রে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া ১৯৬৮
জাভেদ মিয়াঁদাদ পাকিস্তান ভারত ১৯৮৯
গর্ডন গ্রিনিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইংল্যান্ড ১৯৯০
অ্যালেক স্টুয়ার্ট ইংল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০০
ইনজামাম উল হক পাকিস্তান ভারত ২০০৫
রিকি পন্টিং অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০৬
গ্রায়েম স্মিথ দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ড ২০১২
হাশিম আমলা দক্ষিণ আফ্রিকা শ্রীলঙ্কা ২০১৭
জো রুট ইংল্যান্ড ভারত ২০২১
ডেভিড ওয়ার্নার অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২২
মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড ২০২৫