বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) অতীতে অনেকবারই কলঙ্কিত হয়েছে ফিক্সিংয়ের কালো দাগে। গত বিপিএল যেন আগের সব টুর্নামেন্ট ছাড়িয়ে গেছে। এবার দুর্নীতি দমনে বিসিবি যুক্ত করেছে অ্যালেক্স মার্শালকে, যিনি আইসিসিতে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন সফলভাবে। ফিক্সিং কিংবা ক্রিকেটে দুর্নীতি দমন অ্যালেক্স কীভাবে সাফল্যে পেয়েছেন, সেটিই আজ ব্যাখ্যা করলেন সংবাদ সম্মেলনে।
ক্রিকেটে যাঁরা ফিক্সিং বা খেলাটা কলুষিত করার চেষ্টা করে, তাঁদের অনেকের কাছে আতঙ্কের নাম অ্যালেক্স মার্শাল। বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের এই স্বাধীন চেয়ারম্যান জানালেন, তিনি কীভাবে পাকড়াও করেন ফিক্সিংয়ে জড়িতদের, ‘আমি ৮ বছর ধরে ক্রীড়া দুর্নীতি দমনে কাজ করছি। আমি অন্য কারও চেয়ে ক্রিকেটে বেশি লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছি এবং তাদের অভিযুক্ত করেছি এবং নিষিদ্ধ করেছি ক্রিকেটের পুরো ইতিহাসে। এবং দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার সময় আমি কী করছি তা জানি। এগুলো অনেক সময় নেয়, আমি এটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে করি, আমি এটা সঠিকভাবে করি, সব সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করি। যখন আমি ট্রাইব্যুনালে যাই, তখন আমার সাফল্যের হার ৯৮ শতাংশের মতো হয়। কারণ, আমি হোমওয়ার্ক করি এবং যখন এটি ট্রাইব্যুনালে যায়, তখন আমার মামলায় প্রায় সবসময়ই (অভিযুক্তরা) দোষী সাব্যস্ত হয়। দুই-একটি ব্যতিক্রম থাকতে পারে। হ্যাঁ, সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাইনি এবং এখনো সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।’
এরই মধ্যে বিসিবি ৯ অভিযুক্ত ক্রিকেটারকে রাখেনি সর্বশেষ বিপিএলের নিলামে। ২০২৬ বিপিএলকে পরিচ্ছন্ন রাখার অঙ্গীকার মার্শালের, ‘কিছু লোক আছে যারা বিপিএলের সাম্প্রতিক সংস্করণগুলোতে দুর্নীতি দমন আইন লঙ্ঘন করে পার পেয়ে গেছে। সেই লোকেরা এই ইভেন্টটিকে টার্গেট করবে। আমি এবং আমার দল আইসিসির সহায়তায়, সেই লোকদের ছেঁটে ফেলার এবং তাদের এটি করা থেকে বিরত রাখতে অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছি। এবং কিছু লোক এখন থেকে বিপিএলে কিছু অপ্রীতিকর চমক দেখাবে।’
মার্শাল ক্রিকেটে জড়িত মানুষদের আহ্বান করছেন সন্দেহজনক যেকোনো কিছু মন খুলে শেয়ার করতে, যে সব গোপনীয়তার সঙ্গে তাঁরা দেখবেন, ‘এখন সময় এসেছে গোপনে এগিয়ে আসার এবং আমাদের সঙ্গে কথা বলার। আপনার কথা শুনব, আমরা এটি গুরুত্ব সহকারে নেব, আপনি আমাদের যা বলবেন তা মিডিয়াতে প্রকাশিত হবে না।’
ফিক্সিং হওয়ার ক্ষেত্রে টিম হোটেল একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সেখানে কীভাবে সন্দেহভাজন কিংবা জুয়াড়িমুক্ত করা হবে, সেটির কিছুটা ধারণা দিলেন মার্শাল, ‘খেলোয়াড়েরা যখন ক্রিকেট ম্যাচ থেকে দূরে থাকে, তখন তারা তালাবদ্ধ থাকে না এবং আমি সারা বিশ্বে অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিয়েছি। খেলোয়াড়েরা গলফ খেলে, তারা কেনাকাটা করতে যায়, যাই হোক না কেন। হোটেলের পরিবেশ খুবই আকর্ষণীয়। কারণ, দুর্নীতি দমন আইনের কিছু লঙ্ঘন হোটেলের পরিবেশে ঘটে যাওয়া নৈমিত্তিক কথোপকথন এবং অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের মাধ্যমে তৈরি হয়। হোটেলে লোকেদের কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করব আমরা।’