পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্টে মুড়ি মুড়কির মতো উইকেট পড়েছে। ৩২ উইকেট পতনের ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে দুই দিনে। তবু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের পিচকে ভালো রেটিং দিয়েছে।
অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের পিচকে আইসিসি সবচেয়ে ভালো রেটিং দিয়েছে। সেই ম্যাচের ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাধুগালে তাঁর প্রতিবেদনে পার্থের পিচকে সবচেয়ে ভালো বলেছেন। সবচেয়ে ভালো, সন্তোষজনক, অসন্তোষজনক, আনফিট—সাধারণত যেকোনো ভেন্যুর পিচকে চার ধরনের রেটিং দিয়ে থাকে আইসিসি। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা পার্থের উইকেটকে সবচেয়ে ভালো বলার অর্থ এই পিচে সিম মুভমেন্ট সীমিত ছিল। বাউন্স ছিল সামঞ্জস্যপূর্ণ। ব্যাটার ও বোলারদের মধ্যে লড়াইয়ে একটা ভারসাম্য দেখা গেছে।
পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামের প্রধান কিউরেটরের দায়িত্বে আছেন আইস্যাক ম্যাকডোনাল্ড। তাঁকে (ম্যাকডোনাল্ড) ও মাঠকর্মীদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ক্রিকেট বিভাগের প্রধান জেমস অ্যালসোপ। পার্থের পিচের ব্যাপারে আইসিসির রেটিং নিয়ে অ্যালসপ বলেন, ‘ম্যাচ রেফারির সবচেয়ে ভালো রেটিং এটাই প্রমাণ করে যে এই পিচে ব্যাটিং-বোলিংয়ে ভারসাম্যপূর্ণ লড়াইয়ে দেখা গেছে। দুই দলের পেসাররাই দাপট দেখিয়েছেন। এমন উন্মত্ত লড়াইয়ের কারণেই ম্যাচটা মাত্র দুই দিন টিকেছে।’
পার্থে দুই দিনে শেষ হওয়া অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে হয়েছে ৮৪৭ বল। অ্যাশেজের ইতিহাসে এটা সংক্ষিপ্ততম ম্যাচ। দুই দিনে শেষ হওয়া টেস্টে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৮ উইকেটে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৩ বলে ১২৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর বলেছিলেন, ‘এই উইকেট দ্বিতীয় দিন শেষে ভালো হয়েছে। সন্ধ্যার পরে সম্ভবত সেরা উইকেট হয়ে যেত। গত বছরও আমরা এমনটা দেখেছি।’
ঝোড়ো সেঞ্চুরির পরও ম্যাচসেরার পুরস্কার পাননি হেড। ১১৩ রানে ১০ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছেন মিচেল স্টার্ক। টেস্টে এই নিয়ে তিনবার ম্যাচে ১০ উইকেট পেয়েছেন। এই ম্যাচ দিয়ে টেস্টে অভিষেক হওয়া অস্ট্রেলিয়ার পেসার ব্রেন্ডন ডগেট নিয়েছেন ৫ উইকেট। ৪ উইকেট নিয়েছেন স্কট বোল্যান্ড ও ক্যামেরন গ্রিন পেয়েছেন এক উইকেট। ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। আরেক ইংলিশ পেসার ব্রাইডন কার্স ৫ উইকেট পেলেও সেটা নিয়েছেন দুই ইনিংস মিলে। জফরা আর্চার ম্যাচে মাত্র ২ উইকেট পেলেও প্রথম ইনিংসে আগুন ঝরানো বোলিং করেছেন।
ক্রিকইনফোর ২২ নভেম্বরের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে খেলা দেখতে এসেছেন ৫১৫৩১ ও ৪৯৯৮৩ দর্শক। তার মানে পার্থের গ্যালারিতে বসে ১ লাখ ১ হাজার ৫১৪ দর্শক অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট দেখেছেন। দুই দিনে টেস্ট শেষ হওয়ায় সিএর ৩০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ২৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ৪ ডিসেম্বর ব্রিসবেনের গ্যাবায় শুরু হবে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্ট দিয়ে অধিনায়ক হয়ে ফিরছেন প্যাট কামিন্স।