প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং প্রবীণ সম্পাদক নুরুল কবিরের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং প্রবীণ সম্পাদক নুরুল কবিরের ওপর হামলা ও অপপ্রচারের আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
আজ শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই নিন্দা জানান।
ওই পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, ‘প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং প্রবীণ সম্পাদক নুরুল কবিরের ওপর হামলা ও অপপ্রচারের আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। স্বাধীন গণমাধ্যম রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার পূর্বশর্ত। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা আমাদের সবাই মিলেই নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের আমলে যেভাবে গণমাধ্যমের উপর নগ্ন হামলা করা হতো সেই সংস্কৃতিতে আমরা ফিরতে চাই না। একই সাথে গণমাধ্যমগুলোর প্রতি আমার আহ্বান, দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন এবং যেকোনো ধরনের ঘৃণামূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকুন।’
জামায়াত আমির আরও বলেন, হাইকমিশন কার্যালয়সহ কয়েকটি কালচারাল সেন্টারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একই সঙ্গে ধর্ম অবমাননা চরম অন্যায় ও গর্হিত কাজ। কেউ এই অন্যায় করলে আদালতের মাধ্যমে তার বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। বিচার নিজ হাতে তুলে নেওয়া ইসলামের শিক্ষা নয়।
এ দেশের মূলধারার সকল ইসলামপন্থী দল ও সংগঠন নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী এবং কোনো অবস্থাতেই আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার পক্ষে নয়। পরিকল্পিত উপায়ে স্যাবোটাজ করার জন্যই কোনো পক্ষ এ কাজ করে থাকবে বলে আমাদের ধারণা। ঘটনা ঘটার পূর্বে কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়া এবং ঘটনা শুরু হওয়ার দীর্ঘ সময় পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এগিয়ে না আসা প্রমাণ করে— প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা দোসররা এই স্যাবোটাজ পরিকল্পনার অংশ হয়ে থাকতে পারে। দেশবাসীকে আরও সতর্ক থাকতে হবে, কেউ যেন স্যাবোটাজ করার সুযোগ না পায়।
আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পাশে দাঁড়ান এবং অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনুন। সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে দ্রুত সক্রিয় ও জবাবদিহিমূলক করে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
দেশকে অস্থিতিশীল করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিভাজনের সুযোগ নিয়েই আধিপত্যবাদ আমাদের ওপর সওয়ার হয়। আমরা যদি আজ ঐক্যবদ্ধ হতে না পারি, তবে ওসমান হাদীর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। আসুন, বিভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি। দেশের সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
শহীদ হাদীর রক্ত আমাদের ঐক্যবদ্ধ করুক। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। তিনি আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে হেফাজত করুন। আল্লাহ হাফেজ।