আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আজ সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন দুই ছাত্রপ্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। এর পর থেকেই তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়।
উপদেষ্টা পদ ছাড়ার পর আসিফ মাহমুদ কোন দল থেকে নির্বাচনে লড়বেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে যোগ দেবেন অথবা গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি জোটের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করবেন। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১২ ডিসেম্বর আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নয়, বরং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই ঢাকা-১০ আসনে লড়বেন।
ঢাকা-১০ আসনটি রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় এখানে ত্রিমুখী বা চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এই আসনে ইতিমধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন:
বিএনপির দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমকে এই আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জসীম উদ্দিন সরকার।
তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন পর্যন্ত এই আসনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আসিফ মাহমুদের সমর্থকেরা ধানমন্ডি এলাকায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম এই সমন্বয়কের নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা তরুণ ভোটারদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি করেছে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর, বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, আপিলের দিন ১১ জানুয়ারি, আর আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি।
অবশ্য গতকাল রোববার সংশোধিত তফসিলে রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের আপিল করার সময় দুই দিন কমানো হয়েছে। আপিলের সময় ৫-১১ জানুয়ারি পরিবর্তন করে ৫-৯ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
আপিল নিষ্পত্তির তারিখও দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। ১২–১৮ জানুয়ারির পরিবর্তে ১০-১৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
তফসিলে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন রাখা হয়েছে ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দের দিন ২১ জানুয়ারি। সব প্রক্রিয়া শেষে ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে।
এবার ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
এবারের নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি এবার সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার সংশ্লিষ্ট গণভোটও রয়েছে। এ কারণে কিছু ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষ (যেখানে ব্যালটে সিল দেওয়া হয়) বাড়াবে ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাবরের মতো সাদা রঙের ব্যালট পেপার আর গণভোটের জন্য গোলাপি রঙের ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হবে।