‘আমরা তাঁরে ভোট দেব। আমাদের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দেশের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভালোভাবে দেশ পরিচালনা করতে হবে। অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’ বলছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা বৃদ্ধ আবুল কাশেম। তিনি বিএনপির কোনো নেতা নন, দলে তাঁর কোনো পদ নেই। কেবলমাত্র দলটির সমর্থক তিনি। ইতিহাসের সাক্ষী হতে তারেক রহমানকে নিজের চোখে একবার দেখতে রাজশাহীর বাগমারা থেকে ঢাকা ছুটে এসেছেন এই ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ। পৌষের কনকনে ঠান্ডা আর শারীরিক নানা অসুস্থতা উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার দিনের আলো ফোটার আগেই পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কে পৌঁছেছেন তিনি। আবুল কাশেমের মতোই লাখো জনতা হাজারো প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন তারেক রহমানের জন্য।
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে রাজধানীর ৩০০ ফুট এলাকায় জনতার ঢল নেমেছে। গতকাল বুধবার বিকেল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল হতেই পুরো ৩০০ ফুট সড়ক বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। তাদের প্রত্যাশা তারেক রহমান আসায় দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটবে। নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবেন তিনি। গরীব মানুষের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করবেন, দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরবেন। এমন নানা প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পূর্বাচলে সমবেত হওয়া মানুষেরা।
পূর্বাচলে আসা আবদুল আজিজ নামের একজন বলেন, ‘আমাদের আশা, উনি ইলেকশনে পাশ করে সুস্থভাবে দেশ পরিচালনা করবেন। দ্রব্যমূল্য কমাবেন। আমরা গরীব মানুষ যাতে চলতে পারি, ভালোমতো বাঁচতে পারি। এই আমাদের প্রত্যাশা।’
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) লন্ডন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১২টায়) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। তাঁকে বহনকারী ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর সকাল ১১টা ৪ মিনিটের দিকে ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। আনুমানিক বেলা ১২টার দিকে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারে ফ্লাইটটি।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এরপর থেকে তিনি সে দেশেই ছিলেন। বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা বলছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বিএনপির রাজনীতিতে আসবে নতুন মাত্রা।
পঞ্চগড় থেকে আসা তরুণ যুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘আমি বিএনপিকে ভালবাসি। অনলাইনে নেতার (তারেক রহমান) ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে শরিক হয়েছি। আজকে তাঁকে নিজের চোখে দেখে ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাই।’