বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমাদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আমাদের কর্মীরা ক্লান্ত কিন্তু হতাশ নয়। আমাদের নেতা-কর্মীরা যে রকম অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে এখনো বুক টান করে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা রক্ষায়, এই স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা প্রতিবেশীদের নেই, কারও নেই।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
‘বিএনপি জোটের আন্দোলন চলে রিমোট কন্ট্রোলে’—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘হ্যাঁ, বিএনপি রিমোট কন্ট্রোলে চলে। সেই রিমোট কন্ট্রোল দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার হাতে নয়তো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমানের হাতে। আপনাদের রিমোট কন্ট্রোলটা কোথায়? আপনাদের সরকারের রিমোট কন্ট্রোল কার হাতে? মোদির হাতে, না অজিত দোভালের হাতে নাকি অমিত শাহের হাতে। তাঁদের (ভারতের) রিমোট কন্ট্রোলে আপনাদের চলতে হয়।’
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছিলেন না সারা বিশ্বের মানুষ যেভাবে গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে ষড়যন্ত্র করছিল, ভারত যদি আমাদের পাশে না থাকত এই নির্বাচন আমরা করতে পারতাম না। ভারতই আপনাদের রেখেছে, ভারতই আপনাদের রাখবে। তার মানে গণতন্ত্রের অবস্থা কী? বাই দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল, অব দ্যা পিপল আর আপনাদের কথা শুনে মনে হয় ডেমোক্রেসি মিনস—বাই দ্যা ইন্ডিয়া, ফর দ্যা ইন্ডিয়া, বাই দ্যা ইন্ডিয়া।’
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, বাংলাদেশটা আজকে কাঁটাতারে ঝুলছে। অনেক বছর আগে ফেলানী যেমন কাঁটাতারে ঝুলেছে, আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কাঁটাতারে ঝুলছে। এই কাঁটাতার কাটতে হবে, ঝুলিয়ে রাখা চলবে না। দেশ ও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশটাকে বাঁচাতে হলে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হলে একাত্তরের মতো গর্জে উঠতে হবে।
উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৭ জানুয়ারি থেকেও কম উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের থেকেও কম। যে যেখানে পারছে সে সেখানে সিল মারছে। বাইরে ফিটফাট আর ভেতরে সদরঘাট—এই হচ্ছে নির্বাচনের অবস্থা।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।