হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

সেতুর মই

সম্পাদকীয়

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় খালের ওপর নির্মিত হয়েছিল একটি সেতু। কিন্তু তাতে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। এলাকাবাসী সেই সেতুতে চলাচল করে মইয়ের মাধ্যমে। উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ওয়াপদা খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল বাশাইল কলেজের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের খাল পারাপারের সুবিধার জন্য। ২৮ লাখ টাকায় সেতু নির্মাণ করা হলো ঠিকই, কিন্তু তাতে থাকল না সংযোগ সড়ক। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক বললেন অদ্ভুত কথা! কাজটা পেয়েছিল তাঁর প্রতিষ্ঠান, তবে কাজ করেছে অন্য প্রতিষ্ঠান। তারাই নাকি সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজটি করে দেবে!

এই এক জ্বালা। দিনের পর দিন এই ধরনের অনিয়ম চলছে, অনিয়ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আর তাতে ভুক্তভোগী হচ্ছে তারাই, যাদের উপকারের জন্য কাজটা করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে সত্যিই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সেটাই-বা কে জানে! পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেই দ্রুততম সময়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হবে—এমন ভরসাও করা যাচ্ছে না।

কেন এমন হয়? একটু ভাবলেই দেখা যাবে, চালাকি আর দুরভিসন্ধি থাকলেই কেবল এ ধরনের কাজ করতে পারে কেউ। বিপুল অর্থ ব্যয়ে সংযোগ সড়কবিহীন সেতু নির্মাণ করলে তাতে স্থানীয় জনগণের কোনো উপকারই হয় না। কিন্তু নির্মাণকারীদের আইনের আওতায় আনা হয় না, হলেও নানা রকম ফুসমন্তরে তারা বেরিয়ে আসে। প্রশ্ন হলো, তাহলে এই সেতু নির্মাণের উপযোগিতা কোথায়? স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনেই তো ঘটছে এসব অনিয়ম। কেউ কি সেতুটি নির্মিত হওয়ার পর উদ্বোধন করেছিলেন? নাকি বিনা উদ্বোধনেই এই শ্বেতহস্তী জায়গা করে নিয়েছে খালের ওপর? কেউ কি কাজ শেষে ঠিকভাবে সেটি হলো কি না, তা পরীক্ষা করে দেখেন না? আসলে কার কাছে কে জবাবদিহি করবে, তার কোনো নিয়মনীতি কি নেই?

আরেকটি কথা। যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়েছিল, তারা কেন কাজটি করেনি? সেই কাজ করার অনুমতি অন্য কাউকে দিয়েছে কেন? কোনো ভয় কি কাজ করেছে? যদি ভয় কাজ করে থাকে, তাহলে দরপত্র থেকে শুরু করে সেতু নির্মাণ হওয়া পর্যন্ত পুরো ব্যাপারটির তদন্ত হতে হবে।

সংস্কারের কথা যতটা জোরের সঙ্গে বলা হচ্ছে, কার্যত তা নিষ্পন্ন করা যে কত কঠিন, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায় এ ধরনের অনিয়মগুলো দেখলে। আদতে আইনকানুন তৈরি হলেই বিজয় সমাগত—এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। যে মানুষের ওপর সেটা পালনের দায় পড়বে, তাদের মনোভঙ্গিই নিশ্চিত করবে, আদতে পরিবর্তনটি হলো কি না। এ জন্য ভালো মানুষ চাই। চারদিকে টাকার হাতছানি এবং আইন লঙ্ঘন করেও পার পাওয়ার সুযোগ থাকলে কে আর আইন মানতে চাইবে? কাজটি সময়মতো কেন সম্পন্ন করা হয়নি—এই প্রশ্নগুলো করা না হলে মই দিয়েই সেতুতে উঠতে হবে।

খুলনার এক গোলমেলে ব্যাপার

একটি প্রত্যাবর্তন, বহু প্রত্যাশা

বড়দিনের শুভেচ্ছা

শিক্ষকের ক্ষমতা

ধরা হোক হামলাকারীদের

কী ভয়ংকর!

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়