হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

পুলিশের মধ্যে ভয়

সম্পাদকীয়

গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ বাহিনী এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি। এটা দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বড় একটা সংকট। সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এখনো যদি এ বাহিনী তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে অংশ নিতে ভয় পায়, তাহলে সমস্যা জর্জরিত সাধারণ মানুষ কোথায় নিরাপত্তা পাবে?

২৮ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, পুলিশের মধ্যে ভয় কাজ করছে। ফলে তারা ছোট কোনো ঘটনাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কোনো সংঘর্ষের ঘটনা শুনে স্পটে গেলে সাধারণ জনগণ পুলিশকে আক্রমণ করছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ কোনোভাবেই পুলিশকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছে না। কারণ হলো, জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশ ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ফলে এখনো জনগণ তাদের প্রতি খেপে আছে। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশের অনেক থানায় আগুন দেওয়া, অস্ত্র লুট করা এবং পুলিশ সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে।

একসময়ের শক্তিশালী এই বাহিনী এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। ফলে অপরাধ দমনে তাদের সক্রিয়তা কম দেখা যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর। এই ভয় শুধু তাদের ব্যক্তিগত দুর্দশাই নয়, বরং এটি পুরো রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ১৫ সেপ্টেম্বরের ঘটনা এর এক বাস্তব উদাহরণ। যেখানে অল্পসংখ্যক পুলিশকে বিক্ষোভকারীরা ধাওয়া করে এবং তারা মসজিদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে রাজধানীর আদাবর থানার ৪ জন পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ৮-১০ জন তাদের ওপর হামলা চালায়। এর পর থেকে জরুরি কলে সাড়া দেওয়া নিয়ে দোটানায় রয়েছে পুলিশ।

এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীর মনোবল ফিরিয়ে আনা এবং তাদের কার্যক্রমে সক্রিয়তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য অতি প্রয়োজনীয় হলো, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। পুলিশ সদর দপ্তরকে এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এ জন্য স্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাদের কাজের পরিবেশ, কর্মঘণ্টা, সুযোগ-সুবিধা এবং বিশ্রামের বিষয়গুলো নতুন করে মূল্যায়ন করতে হবে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া সাধারণ জনগণের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদার করা এবং পারস্পরিক আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে।

পুলিশ বাহিনীর এই সংকট শুধু তাদের নিজস্ব সংকট নয়, এটি পুরো রাষ্ট্রের সংকট। যদি এই বাহিনীর মনোবল ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো কঠিন হবে। পুলিশ বাহিনীর মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য সামগ্রিক ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।

নির্বাচনী ব্যয়

খুলনার এক গোলমেলে ব্যাপার

একটি প্রত্যাবর্তন, বহু প্রত্যাশা

বড়দিনের শুভেচ্ছা

শিক্ষকের ক্ষমতা

ধরা হোক হামলাকারীদের

কী ভয়ংকর!

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু