হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

খাওয়াদাওয়ার রাজনীতি

সম্পাদকীয়

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য ও বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী এক নেতার একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়ার পর তা ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। যদিও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভিডিওটি এডিট করা, তবু যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে এই নেতাকে, তা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।

প্রথমেই বলতে হবে, ১৭ বছরের খিদে নিয়ে যাঁরা ক্ষমতায় যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন, তাঁদের কথাবার্তায় এ ধরনের বেফাঁস শব্দাবলি উচ্চারিত হতেই পারে। কারণ, রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য কী, সেটা জেনে রাজনীতি করার মানুষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। ‘ধান্দাবাজি’র সঙ্গে রাজনীতিকে মিলিয়ে ফেলা হলে কেউ আর এখন শাসন করতে আসেন না। দেশ ও দশের সেবা করার যে প্রতিজ্ঞা ছিল রাজনীতির মধ্যে, তা এখন আপ্তবাক্যে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর যে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, সে অর্থ তুলে এনে নিজের পকেট ভর্তি করার নজির তো কম নেই। ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে সম্পত্তির হিসাব দেওয়ার নজির খুব কম। খোদ এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সম্পত্তির হিসাব দেওয়ার উদাহরণ খুবই দুর্বল। তাই, ক্ষমতায় থাকলে আচরণ একরকম, ক্ষমতার বাইরে গেলে আচরণ অন্য রকম হওয়ার ঘটনা দুর্লক্ষ্য নয়।

আলোচিত এই নেতা বলেছেন, ‘আমি থাকি আর না থাকি, আপনারা এক থাকেন। দল ক্ষমতায় না গেলে কিচ্ছু পাবেন না। এই কয় দিনে, এক বছরে ছোট ছোট চান্দাবাজি যা হইছে, এইটা আমি হইতে দিছি। আমি কেন হইতে দিছি? এই জন্য দিছি যে ১৭ বছর আমার নেতা-কর্মী কিছু খায় নাই।’

রাজনীতি কোন পর্যায়ে চলে গেলে ক্ষমতার সঙ্গে ‘খাওয়াদাওয়া’র সম্পর্কটা এত প্রগাঢ় হয়ে ওঠে? তার মানে দাঁড়ায়, রাজনৈতিক নেতারা বেঁচে থাকেন ক্ষমতার স্পর্শ পেলে। তখনই তাঁদের পেট ভরার মতো টাকাপয়সার আমদানি হতে পারে। ক্ষমতায় না থাকলে খাওয়াদাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, ক্ষমতায় না যাওয়া পর্যন্ত কি উপোস করে থাকেন তাঁরা? তাঁদের

কি বেঁচে থাকার মতো কোনো পেশা নেই? যে দল ক্ষমতায় যাবে, সে দল চাঁদাবাজি করে আখের গুছিয়ে নেবে—রাজনীতির আদর্শ কি শেষ পর্যন্ত এ রকম এক জায়গায় এসে ঠেকেছে?

যে প্রত্যাশার মুখোমুখি হয়েছিল দেশের সর্বস্তরের জনগণ, তা ক্রমেই ফিকে হয়ে এসেছে। বড় কোনো স্বপ্ন দেখে প্রতারিত হতে ভয় পায় দেশের মানুষ। বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর স্বপ্ন দেখিয়ে জনগণকে প্রত্যাশার মুখোমুখি দাঁড় করাল এবং তারপর সে স্বপ্ন ভেঙে গেলে, সে যাতনা জনগণই ভোগ করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জনতার নাম ভাঙিয়ে নিজের আসন পোক্ত করতে চায় বটে, কিন্তু আদতে কি জনতা তাদের যা ইচ্ছে তা করার ম্যান্ডেট দিয়েছে? জনগণ খাওয়াদাওয়ার রাজনীতি চায় না, এ কথা কবে বুঝবে রাজনৈতিক দলগুলো?

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন

সরকারি হাসপাতাল বলে কথা