হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

নতুন আশাবাদ

সম্পাদকীয়

দেশে যখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে নানা শঙ্কা তৈরি হয়েছে—এ রকম পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি কর্তৃক প্রস্তাবিত নতুন খসড়া নীতিমালা উচ্চশিক্ষার এ সেক্টরে একটা পরিবর্তনের আশাবাদ তৈরি করতে পারে।

ইউজিসির প্রস্তাবে অনেক ভালো পরামর্শ আছে। কিন্তু বড় আশাবাদের জায়গা হলো, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন আর ইচ্ছেমতো টিউশন ফি নির্ধারণ করতে পারবে না। আগের আইনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ নিজে ফি নির্ধারণ করে ইউজিসির কাছ থেকে শুধু অনুমোদন নিত। এতে তারা ইচ্ছেমতো ফি নির্ধারণ করত। সেখানে শিক্ষার্থীদের সমস্যা-সংকট দেখা হতো না। কিন্তু এখন ইউজিসিই ফি নির্ধারণ করে দেবে আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তা মানতে বাধ্য থাকবে। না মানলে জরিমানার মধ্যে পড়তে হবে।

আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধির প্রয়োজন থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পাওয়া শুরু হয়। এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় কাছাকাছি সংখ্যায় চলে গেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। একসময় শুধু আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান পরিবারের সন্তানেরা এসব জায়গায় পড়ার সুযোগ পেত। কিন্তু এখন নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানেরাও এখানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। বিশেষ করে দরিদ্র হলেও শুধু মেধার কারণে তারা সে সুযোগ পাচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ধনীর সন্তানেরা পড়ার সুযোগ পায়—আগের সেই ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেই সুযোগের জায়গাটা এখনো অবারিত হয়নি। কারণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এখনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশনসহ নানা বাড়তি ফির কারণে নিম্নবিত্ত বা দরিদ্র ঘরের সন্তানেরা সেখানে অধ্যয়ন করার কথা কল্পনাও করতে পারে না।

একসময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ ছিল, এখানে টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি করা হয়। আদতে কথাটি এখন আর প্রযোজ্য নয়। কারণ, দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুণ, মান ও গবেষণায় এগিয়ে আছে। দেশ এবং দেশের বাইরের নানা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা থেকে সেটা জানা যায়।

এদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ হলো, এখানে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বা বিষয়ওয়ারি বিষয়েই দক্ষ করে তোলা হয়। সেখানে মুক্তবুদ্ধি বা রাজনীতিচর্চার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে শুধু ক্যারিয়ারিস্ট হিসেবে গড়ে তোলা হয়। ফলে এখানকার শিক্ষার্থীরা ফার্মের মুরগির মতো করে গড়ে ওঠে। সমাজ, মানুষ ও রাষ্ট্র নিয়ে তারা ভাবে না। কিন্তু কথাটি যে ঠিক নয়, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণই সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে।

আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অনেক ক্ষেত্রে ভালো কিছু আর আলোর মুখ দেখে না। নিয়ম অনুযায়ী, ইউজিসির এই খসড়া প্রস্তাব আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাবে, তারপর মন্ত্রণালয় সেটা অনুমোদন দেবে। আমরা চাই, ইউজিসির এই প্রস্তাবটি বড় বেশি সংশোধিত না হয়ে পাস করা হোক। তাতে শিক্ষাব্যবস্থায় একটা নতুন ধারা তৈরি হতে পারে।

নির্বাচনী ব্যয়

খুলনার এক গোলমেলে ব্যাপার

একটি প্রত্যাবর্তন, বহু প্রত্যাশা

বড়দিনের শুভেচ্ছা

শিক্ষকের ক্ষমতা

ধরা হোক হামলাকারীদের

কী ভয়ংকর!

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু