হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

‘ভুল’ হয়ে গেছে?

সম্পাদকীয়

কারও হাত থেকে কাচের গ্লাস অনিচ্ছাকৃতভাবে পড়ে ভেঙে গেলে তিনি ক্ষমা চাইতেই পারেন। ভুল হওয়ায় তাঁকে ক্ষমাও করা যেতে পারে। কিন্তু কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অন্য কারও ক্ষতি করার জন্য হাতে থাকা কাচের গ্লাস নিচে ফেলে ভাঙেন এবং পরে ক্ষমা চান, তখন কি তাঁকে ক্ষমা করা উচিত? প্রশ্নটা রইল পাঠকের কাছে। তবে কেউ দণ্ডনীয় অপরাধ করলে তার শাস্তি হবে কি না, সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকেই। যেমন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য মোছা. নুরনাহার বেগম যে অপরাধ করে ক্ষমা চেয়েছেন, সেই অপরাধের শাস্তি হবে কি না, সেটা তাঁর ঊর্ধ্বতনেরাই বলতে পারবেন।

নুরনাহার বেগম কী করেছেন, তা জানা যায় ২১ জুলাই আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর থেকে। খানসামার আক্তারিনা নামের এক তরুণীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁর জামাতার কাছে। মা-বাবাহারা ওই তরুণী অবিবাহিত। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ভাইয়ের দেখাশোনা করেন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ‘ভিডব্লিউবি’ কর্মসূচিতে (বিনা মূল্যে মাসিক ৩০ কেজি চাল) নাম অন্তর্ভুক্ত করতে আবেদন করার পর আক্তারিনা জানতে পারেন তাঁর নামে ইতিমধ্যে মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু আছে।

বিষয়টি উপজেলা মহিলাবিষয়ক কার্যালয় যাচাই-বাছাই করলে উঠে আসে নুরনাহারের নাম। এই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর সুপারিশে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে এক অবিবাহিত তরুণীকে গর্ভবতী দেখিয়ে ভাতার আবেদন করা হয়। এবং তাঁর জামাতার ফোন নম্বর ব্যবহার করে সেই ভাতার অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। মাতৃত্বকালীন ভাতার আওতায় একজন প্রসূতি মা প্রতি মাসে ৮০৫ টাকা হারে তিন বছর পর্যন্ত ভাতা পান। আক্তারিনার নামে এই ভাতা চালু থাকলেও তা পাচ্ছিলেন নুরনাহারের জামাতা।

এ ব্যাপারে নুরনাহার বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, তাঁর ‘ভুল’ হয়ে গেছে। তাঁর মেয়ের বয়স কম হওয়ায় নাকি অন্য আরেকজনের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তিনি এ কাজ করেছেন। অর্থাৎ, তিনি নিজের মেয়ের জন্য জামাতার ফোন নম্বর ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। একটি অপরাধ তিনি করেছেন ভুয়া তথ্য দিয়ে এবং অন্যের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে। এই অপরাধ ঢাকতে গিয়ে বলে ফেলেছেন আরও একটি অপরাধের কথা—তাঁর মেয়ের বয়স কম, যার জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। অর্থাৎ, মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক নয়। নিজের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে তিনি বিয়ে দিয়েছেন বা বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন—এটাও তো অপরাধ।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে যিনি অন্যায়-অপরাধ করেন, তিনি ‘ভুল হয়ে গেছে’ বলে কি পার পেয়ে যাবেন? যিনি একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধি, তিনিই যদি দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করে বেড়ান, তাহলে জনগণের সেবা কীভাবে করবেন?

ভুক্তভোগী আক্তারিনা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন। উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা মোস্তারিও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও অপেক্ষায় রইলাম সুষ্ঠু বিচারের উপযুক্ত উদাহরণের।

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন