হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

ইয়াবা

সম্পাদকীয়

মানিব্যাগে কিংবা ভ্যানিটি ব্যাগের কোনো এক কোণে ফেলে রেখে দিব্যি চলে আসা যাবে বাড়িতে। তারপর? তারপর কী! ‘তার আর পর নেই’ বলে গান গাইলে সংস্কৃতির একটু কদর হবে বটে, কিন্তু সমস্যাটা বোঝা যাবে না। বুঝতে হবে নেশাকারী ব্যক্তির আচরণ দেখে। কীভাবে সে দিনের পরদিন না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে সময়। কেন কোনো ক্লান্তি আসছে না তার শরীরে?

আবার কখনো একনাগাড়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঘুমের সমুদ্রে। এবং তারপর? হ্যাঁ, তারপরই লাগামহীন এক অভিশপ্ত জীবন বয়ে চলতে হয় তাকে। চাইলেই সে আর ফিরে আসতে পারে না স্বাভাবিক জীবনে।

চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার হাজীপাড়ায় ধরা পড়েছেন দুই নারী। গোপনে ইয়াবা বিক্রি করতেন তাঁরা। আজকের পত্রিকার ছোট্ট খবর এটা। ইয়াবা ব্যবসার বিশাল জগতে গ্রেপ্তারকৃত এ দুই নারী নিতান্তই চুনোপুঁটি। মূল বাঁশিওয়ালারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। কখনো কখনো বিভিন্ন পর্যায়ে আঁতাতের কারণে সম্মিলিতভাবে সীমান্ত এলাকায় কানামাছি ভোঁ-ভোঁ খেলাও হয়। কিন্তু সেই খেলায় আর যাই হোক, ‘বাঁশিওয়ালা’কে ছোঁয়া যায় না। 

একসময় হেরোইনের দৌরাত্ম্য দেখা গেছে, তারপর ফেনসিডিল। নেশার জন্য খেলে মহা আরামে ঝিম মেরে পড়ে থাকা যায়। ইয়াবা কিন্তু শরীরে ঘুমের আমেজ আনে না, সে বরং শরীরে ঢুকে মন ও শরীরকে একই সঙ্গে চাঙা করে তোলে। ফলে নেশাগ্রস্ত মানুষ মনে করে, বহু কাজ করার জন্য পাওয়া গেছে অঢেল সময়। আসলে সেটা যে তাকে নিয়ে যাচ্ছে অর্থহীন এক জগতের দরজার দিকে, সেটা সে বুঝতেও পারে না।

দেশের যেকোনো নাগরিক একটু কান পাতলেই বুঝতে পারবেন, এই ধ্বংসাত্মক খেলা নিতান্ত অগোচরেই যে কারও দরজায় কড়া নাড়ছে। কেউ কোনো শিক্ষার্থীকে বলতে পারে, ইয়াবা সেবন করলে রাত জেগে পড়া যাবে। কেউ সংগীতশিল্পীকে বলছে, কণ্ঠ সুরেলা রাখার জন্য এর তুলনা নেই। কোনো শিশু বা কিশোর স্থূলকায় হলে অবলীলায় 
বলা হচ্ছে, বিনা চেষ্টায় শরীর শুকিয়ে নেওয়ার জন্য ইয়াবাই মহৌষধ।

নাটকের জগৎ বা অভিনয়পাড়া থেকেও এই বস্তুর সঙ্গে মোলাকাতের খবর হাওয়ায় ভাসে। চীনে আফিমযুদ্ধের কথা বলে অনেক সময় মাদকের ভয়াবহতার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এই যুগে তা যে আরও অনেক দিকে ডালপালা মেলে ধরেছে, সেই সত্যটা বোঝা দরকার। পরিবার, বিদ্যালয়, বন্ধুবান্ধব, আশপাশের মানুষ—যেকোনো দিক থেকেই শোনা যেতে পারে বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুর।

সেই সুর বন্ধ করার জন্য সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদার করা, শাস্তি দেওয়া ইত্যাদি এ থেকে বেরিয়ে আসার পথ নয়। দেশের তরুণদের জন্য আশাব্যঞ্জক পথের দিশা দিতে না পারলে হতাশাগ্রস্ত তরুণ নতুন স্বপ্ন দেখতে পারে না। তাই সংকটটির মূলে ঢুকেই কেবল এ থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে বের করতে হবে। কাজটা খুব সহজ কিছু নয়। 

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন

সরকারি হাসপাতাল বলে কথা

তরুণদের ভোট