হোম > মতামত

বিচিত্র প্রতিবাদ

সম্পাদকীয়

চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার মোড়ে হঠাৎ বেহালা হাতে দাঁড়িয়ে গেলেন দুই তরুণী। বেহালা থেকে ভেসে এল করুণ সুর। সাউন্ডবক্স থেকে ভেসে আসতে লাগল পশু-পাখির ডাক, যেন তারা বলতে চায়, ‘আমাদের রক্ষা করো।’ সেখানে ছিল গরু, মহিষ, ছাগল আর ভেড়া। ছিল নানা ধরনের ফুলের গাছপালা। পরিবেশ বাঁচানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই ভিন্নধর্মী আয়োজন মন কেড়ে নেয় পথচারীদের।

মানুষ নানাভাবে পরিবেশ ধ্বংস করছে। জলবায়ু ইতিমধ্যেই সংকটে পড়ে গেছে। বিশ্বের টাকাওয়ালা দেশগুলো ধাপে ধাপে কারিগরি উন্নতির শিখরে উঠছে, অন্যদিকে তাদের কারণেই মূলত বাড়ছে কার্বন নিঃসরণ। পৃথিবী হয়ে উঠছে বসবাস অযোগ্য। এ জন্য যারা দায়ী, তারা বিশ্বব্যাপী এতটাই ক্ষমতাধর যে জলবায়ু সম্মেলন করেও তা থেকে কোনো নিষ্কৃতি মিলছে না।

একজন শিল্পী তাঁর এই অভিনব প্রতিবাদের ভাষায় আমাদের মনে করিয়ে দিলেন, পৃথিবী মানেই শুধু মানুষ নয়, পৃথিবী মানে সমগ্র জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি নিয়ে গড়ে ওঠা গ্রহটি। সবারই বাঁচার অধিকার আছে, কিন্তু মানুষ সেই অধিকারে বাদ সেধেছে।

অভিনব প্রতিবাদটি আমাদের নীতিনির্ধারকেরা যদি একটু হলেও হৃদয়ঙ্গম করেন, তাহলে আমাদের দেশের পরিবেশ দূষণ এবং পশু-পাখির বিচরণস্থলে হামলার ঘটনা কিছুটা হলেও কমতে পারে। দেশে বনাঞ্চল ধ্বংস করে গড়ে উঠছে বাড়ি। বনের প্রাণীর আর্তি মানুষের মনে এসে পৌঁছাতে পারছে না। নদীদূষণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। মারা পড়ছে মাছ। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে শিল্পী টুটুল চৌধুরী প্রাণের তাগিদে যে কাজটি করলেন, তা প্রকৃতি রক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তুলুক মনুষ্য সমাজকে।

এই প্রতিবাদ দেখে বিশ্বজুড়ে অভিনব প্রতিবাদের কিছু ঘটনা মনে পড়ে গেল। ২০১২ সালে অর্থনৈতিক মন্দায় জর্জরিত হয়ে ইতালিতে বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কর্মচ্যুত শ্রমিকেরা তাঁদের হলুদ হেলমেট সুশৃঙ্খলভাবে একটির পাশে এবং পেছনে রেখে করেছিলেন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। ২০১২ সালে স্থানীয় ডেইরি খামারের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে—এ রকম একটি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তখন এর প্রতিবাদে ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি, হল্যান্ড থেকে হাজার হাজার খামারি ট্রাক্টরে চেপে হাজির হয়েছিলেন ব্রাসেলসে।

পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করার আগেই তাঁরা নিজেরাই পুলিশের ওপর জলকামানের মতো দুগ্ধকামান ব্যবহার করেন। এ-ও ছিল এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবিতে মোমবাতি আন্দোলন হয়েছিল ২০১৬ সালে। লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে মোমবাতি প্রজ্বালন করে সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিল। নিরবচ্ছিন্নভাবে ছয় মাস আন্দোলনের পর প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। 

টুটুল চৌধুরী গোটা মানবজাতির কাছে একটি আকুতি নিয়ে হাজির হয়েছেন—রক্ষা করতে হবে জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ। এই আন্দোলনের সঙ্গে দেশের ক্ষমতাসীনেরা এবং জনগণ ব্যাপকভাবে যুক্ত হলে অন্তত আমাদের দেশটা দূষণমুক্ত হওয়ার পথে একটু এগোতে পারত।

ওসমান হাদির পরিচিতি অনেকাংশে ম্লান করেছে সহিংসতা

রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট: রাশিয়া ও বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

শঙ্কা যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না

হাদি হত্যা এবং আগামী নির্বাচন

দেশের অর্থনীতির দ্বৈত বাস্তবতা

সংযোগ সড়কহীন সেতু

এবার নির্বাচনের দিকে চোখ থাকবে সবার

আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাস ভোক্তার কাছে পৌঁছায় না কেন