আদালত কাউকে পলাতক আসামি হিসেবে ঘোষণা করলে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পদে থেকে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ছাড়া সরকারি কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তিরাও পদত্যাগ না করে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রথম পরিপত্রে এ কথা বলা হয়েছে।
ইসির পরিপত্রে বলা হয়, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন। কেউ তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হলে তাঁর সব কটি মনোনয়নপত্রই বাতিল হবে। নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হবেন, তাঁদের নিজে অথবা তাঁর প্রস্তাবক বা সমর্থককে সশরীরে রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নিয়ম অনুযায়ী পরিপত্র জারি করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা সহজ করতে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের আইনের বিধান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর। একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তাঁরা মনোনয়নপত্র পাননি। তাঁদের সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে মনোনয়নপত্র সরবরাহ করা হবে বলে ইসি জানিয়েছে।
পরিপত্রে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণ প্যানেলে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় ব্যাংক, বিমা ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা-কর্মচারী পাওয়া না গেলে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
পরিপত্রে সংবিধানের ৬৬ (১) (২) ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আরপিওর ১২ (১) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক ঘোষিত ব্যক্তিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এ ছাড়া বিধান অনুযায়ী প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য অন্যদের মধ্যে রয়েছে উপযুক্ত আদালত থেকে অপ্রকৃতিস্থ (মানসিক ভারসাম্যহীন) বা দেউলিয়া ঘোষিত ব্যক্তি, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন বা আনুগত্য ঘোষণাকারী ব্যক্তি এবং নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে অন্তত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তি যার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর পার হয়নি।
১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তিরাও প্রার্থী হতে পারবেন না। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পর তিন বছর পার না হলে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া দুর্নীতির কারণে প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে এবং ব্যাংক ঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ সরকারের বিভিন্ন সেবার বিল খেলাপিরাও প্রার্থী হতে পারবেন না।