সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে হত্যা ও রায় জালিয়াতির পৃথক দুই মামলায় জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার দুটি পৃথক আদালত তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ (দ্বিতীয়) নার্গিস ইসলাম শাহবাগ থানায় করা রায় জালিয়াতির মামলায় তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করেন। অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে কিশোর আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় খায়রুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জাহাঙ্গীর হোসেন।
খায়রুল হকের আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহিন দুই মামলায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পৃথক দুই মামলায় আমরা সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন চেয়ে আবেদন করি। পৃথক দুটি আদালত শুনানি গ্রহণ করে তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।’
মোনায়েম নবী শাহিন জানান, এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা। সেখানে ন্যায়বিচার পাবেন বলে আইনজীবী আশা প্রকাশ করেন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। ওই দিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা কিশোর আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই দিন রাতে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৯ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৩০ জুলাই তাঁকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা রায় জালিয়াতির আরও এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আহাদ হত্যা মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় আন্দোলনের সময় আবদুল কাইয়ুম আহাদ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় তাঁর বাবা আলাউদ্দিন চলতি বছরের ৬ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬৭ জনকে আসামি করা হয়।
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে গত বছরের ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
মুজাহিদুল ইসলাম সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ এনে বলেছেন, বিচারপতি খায়রুল সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রভাবিত হয়ে অবসরপরবর্তী ভালো পদায়নের লোভে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য ২০১১ সালের ১০ মে সংক্ষিপ্ত আদেশটি পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের দেওয়া রায় অনুযায়ী পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।