রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাবে বাংলাদেশে পরিবহনের ভাড়া ও কৃষি উৎপাদন খরচ বাড়বে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে আজ বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশ খুব বেশি গম আমদানি না করলেও বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির কারণে সরবরাহ প্রভাবিত হবে। যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়া ও বিমা মাশুল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আব্দুল মোমেন বলেন, এরই মধ্যে বেশ কিছু ব্যাংকে বৈশ্বিক আন্তব্যাংক লেনদেন সংক্রান্ত সুইফট সিস্টেমে নিষিদ্ধ করার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা, যাদের রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাদের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করলে তা হয়তো মাঝপথে আটকে যেতে পারে। এই অর্থ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে এ ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এই ঋণের অর্থ আসছে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক হয়ে। কেননা, বাংলাদেশ রুবলের বদলে ডলারে ঋণের অর্থ নিতে চেয়েছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা এই লেনদেনে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। চলমান প্রকল্পসমূহে অর্থায়ন এবং ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে বিকল্প পদ্ধতি কী হতে পারে, তা নিয়ে রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, গত ৯ বছরের মধ্যে ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতিবছর ৫০ লাখ টন ডিজেল, ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল, ২ লাখ টন ফার্নেস অয়েল এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন অকটেন আমদানি করে। এখন যে দামে জ্বালানি তেল কিনে বাংলাদেশ নিজেদের বাজারে বিক্রি করছে, তাতে প্রতিদিন ১৫ কোটি ডলারের ওপর লোকসান গুনতে হচ্ছে।