বাংলাদেশের ৩৩ হাজার ৭২৯ জন নাগরিক ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র চার শতাংশের (প্রায় ১ হাজার ৩৫০ জন) আবেদন মঞ্জুর করেছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অ্যাসাইলাম এজেন্সি (ইইউএএ) ‘অ্যাসাইলাম রিপোর্ট-২০২২’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মাল্টাভিত্তিক সংস্থাটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে পরিবেশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশের ৯ লাখ ৬৬ হাজার নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন, যা ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
গত বছরের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, সিরিয়ার ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৯৭ জন, আফগানিস্তানের ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৪৯ জন, তুরস্কের ৫৫ হাজার ৪৩৭ জন, ভেনেজুয়েলার ৫০ হাজার ৮৩৩ জন, কলম্বিয়ার ৪৩ হাজার ২৭৯ জন, পাকিস্তানের ৩৭ হাজার ২৯২ জন এবং বাংলাদেশের ৩৩ হাজার ৭২৯ জন।
এর আগে ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার ব্যক্তি ইইউ দেশগুলোয় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন।
গত বছর বাংলাদেশের মাত্র চার শতাংশ আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন মঞ্জুর হওয়ার বিপরীতে ভারতের এক শতাংশ, পাকিস্তানের নয় শতাংশ, আলবেনিয়ার সাত শতাংশ, তুরস্কের ৩৮ শতাংশ, আফগানিস্তানের ৫৪ শতাংশ, ইয়েমেনের ৮৪ শতাংশ এবং সিরিয়ার ৯৪ শতাংশ নাগরিকের আবেদন মঞ্জুর করেছে সংশ্লিষ্ট ইইউ দেশগুলো।
রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মধ্যে অনেক অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিও রয়েছেন, যাদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছর। এমন ব্যক্তিদের প্রায় ছয় শতাংশ, অর্থাৎ ১ হাজার ৪৩৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনৈতিক আশ্রয় অনুমোদনকারী প্রধান দেশগুলো হলো জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, অস্ট্রিয়া।
বাংলাদেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের অধিকাংশ আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষের ইউরোপে অবস্থান অবৈধ হয়ে পড়তে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকেরা।
ইউরোপের ২৮ দেশের জোট ইইউ’র সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি আছে, যার আওতায় এসব দেশে অবৈধ হয়ে যাওয়া নাগরিকদের যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে ফেরত নিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এই চুক্তির আওতায় গড়ে প্রতি বছর দুই থেকে তিন হাজার নাগরিককে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ফেরত পাঠিয়ে থাকে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়।