হোম > জাতীয়

ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ, দিনভর সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

সারা দেশে ধারাবাহিক সমাবেশের অংশ হিসেবে আজ শনিবার ময়মনসিংহ শহরে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করেছে বিএনপি। গত সেপ্টেম্বরেই সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে রওনা হন। কিন্তু হঠাৎ করে আজ ভোর থেকে ঢাকা–ময়মনসিংহ রুটে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল বন্ধ। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ হওয়ায় সারা দিন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। 

লোকাল বাস সার্ভিসগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। সকালে টঙ্গী থেকে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা পর্যন্ত বিভিন্ন কারখানায় কাজে যোগ দিতে হেঁটে, লেগুনায়, ট্রাকে, রিকশায় যেতে হয়েছে বিপুলসংখ্যক কর্মজীবী মানুষকে। টঙ্গীর আবদুল্লাহপুর থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় সাধারণ যাত্রীদের ভিড় ছিল ব্যাপক। 

গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাসমাবেশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে সরকার। আজ শনিবার ময়মনসিংহের পলিটেকনিক মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির নেতাকর্মীরা এমনটাই অভিযোগ করেছেন। তবে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের বক্তব্য ভিন্ন। তাঁদের দাবি, তাঁরা গণপরিবহন বন্ধ করেননি এবং শিগগিরই সব ঠিক হয়ে যাবে। যদিও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, মালিকেরা গাড়ি চালাতে বাধা দিয়েছেন। 

সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেন, সমাবেশকে যাতে সফল করতে না পারি, সে জন্য সরকারের পেটুয়াবাহিনী গাড়ি–ঘোড়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরেও জিয়ার সৈনিকদের দমানো যায়নি, যাবেও না। লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে বিএনপি কতটা শক্তিশালী। 

ময়মনসিংহের পাশের জেলা গাজীপুর থেকে সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। দূর–দুরান্ত থেকে তাঁরা হেঁটে, ট্রাকে, ট্রলারে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। রাস্তায় যানবাহন না থাকায় সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিও ছিল ভয়ানক। গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহগামী গণপরিবহন না চললেও ঢাকামুখী যানবাহন চলেছে। 

সকালের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার পোশাক কারখানার কর্মকর্তা মাইকেল চন্দ্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন আবদুল্লাহপুর থেকে ময়মনসিংহগামী বিভিন্ন বাসে নিজের কর্মস্থলে যাই। আজ দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকার কারণে মালবাহী ট্রাকে চড়ে রওনা দিচ্ছি।’ 

ময়মনসিংহ জেলা থেকে টঙ্গীতে এসেছিলেন এক দম্পতি। সঙ্গে ছেলে–মেয়ে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কে বাস না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁরা টঙ্গীতে পৌঁছান। এ পর্যন্ত আসতে তাঁদের প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এভাবে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষদের। 

কেবল গাজীপুর থেকেই নয়। গণপরিবহন চলেনি শেরপুর জেলা থেকেও। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ নৌযানে করে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। শেরপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোখলেছুর রহমান জীবন বলেন, ‘বিএনপির নেতা–কর্মীরা যেন ময়মনসিংহে সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন, সে জন্য বাস মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। এ জন্য বিকল্প উপায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।’ 

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা থেকেও একইভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীরা নৌযানে করেই সমাবেশে যোগ দিতে গেছেন। নান্দাইল ছাড়াও গফরগাঁও, ত্রিশাল, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর উপজেলার নেতা-কর্মীরা এভাবেই সমাবেশে যোগ দেন। 

দুপুরের দিকে নান্দাইল উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক অনিক আহমেদ বাবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগীয় গণসমাবেশে যাতে উপস্থিত না হতে পারি, সে জন্য যানবাহন বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে নৌপথে হাজার হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে সমাবেশে যাচ্ছি।’ 

বিএনপির নেতাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় গাজীপুর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান উদ্দিন সরকারের কথায়। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ বা ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী সকল ধরনের যানবাহন চলাচল ভোর থেকে বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকেরা গাড়ি চালাচ্ছেন না এবং মালিকপক্ষ শ্রমিকদের গাড়ি চালাতে দিচ্ছেন না। এ কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।’ 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ দক্ষিণের সহকারী কমিশনার মো. ফয়জুল রহমান বলেন, ‘দূরপাল্লার যান চলাচল করছে না। তবে গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী বাস চলতে দেখা যায়। সড়কে অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।’ 

তবে পরিবহন মালিক পক্ষের বক্তব্য এর উল্টো। তাঁদের দাবি, তাঁরা বন্ধ গণপরিবহন বন্ধ করেননি। বরং সহিংসতার আশঙ্কার কারণে চালকেরাই বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। 

ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্তা বলেন, ‘আমরা কোনো গণপরিবহন বন্ধ করিনি। বাস চালকেরা যদি তা বন্ধ করে দেয় তাহলে আমাদের করার কিছু নেই। তাঁরা আশঙ্কার কারণে পরিবহন বন্ধ রেখেছে। আশা করছি, রাত থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ 

এই বিষয়ে শেরপুর জেলা বাস-কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার ঘোষ বলেন, ‘ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সংঘর্ষ হয়েছে। আজও সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামীকাল রোববার থেকে যথারীতি বাস চলাচল করবে।’

প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন গাজীপুর, টঙ্গী, ময়মনসিংহ, নান্দাইল ও শেরপুর প্রতিনিধি।

ফায়ার সার্ভিসে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করবে সরকার, বাড়বে সুযোগ-সুবিধা

শেখ হাসিনাকে ফেরতের ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

মধ্যরাতে প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, রোববার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা

ব্যালটের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এসপিরা

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

জিয়া পরিবারের আর কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবে না: রিজওয়ানা হাসান

পোস্টাল ভোট গণনায় সংশোধনী ও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন

সেনাপ্রধানের সঙ্গে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন হবে ঐতিহাসিক—নতুন এসপিদের প্রধান উপদেষ্টা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, জানাল কাতার সরকার