হোম > জাতীয়

আজকের নারী সমাজ গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী এক ভিন্ন নারী সমাজ: প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

এ বছরও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিবছরের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক দেওয়া হয়েছে। এ বছর নারীশিক্ষায় (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকারে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, নারী জাগরণে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা ও মানবাধিকার ক্যাটাগরিতে নাবিলা ইদ্রিস বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উদ্‌যাপন ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যে আদর্শে বেগম রোকেয়া আমাদের নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন, অতি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছিলেন তাঁর বক্তব্যে, তাঁর লেখায়; আজকে যে চারজন পুরস্কার পেলেন, তাঁরা রোকেয়ার সেই পথে আমাদের জাতিকে এগিয়ে দিলেন। এটি আরও একটি পুরস্কার না, এটা যুগান্তকারী পুরস্কার। তাঁরা আমাদের দুনিয়ার সামনে অন্য স্তরে নিয়ে গেছেন। তাঁরা শুধু বাংলাদেশের না, তাঁরা সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দেওয়ার মেয়ে।’

আজকের আয়োজনে শুধু বেগম রোকেয়াকে স্মরণ নয়, বরং ব্যর্থতা খুঁজে বের করা প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ১০০ বছর পার হলেও আরেকজন রোকেয়া সৃষ্টি করতে পারিনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। তিনি যেসব দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, যেসব স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, এ স্বপ্নকে আমরা আমলে আনতে পারিনি। কথা বলেছি, কিন্তু অগ্রসর হতে পারি নাই। কেন পারলাম না, এটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ও গ্রামীণ ব্যাংকের শুরুর দিকের স্মৃতিচারণা করে নারীদের কঠিন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘দুর্ভিক্ষের আঘাত প্রথমে আসে মেয়েদের ওপরে, শিশুদের ওপরে।’

ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা দেখলাম, মেয়েরা জানে না তাদের নাম কী? সবাই চিনে, অমুকের মা, অমুকের স্ত্রী, অমুকের মেয়ে, নাতি-নাতনি। নাম জানে না। সমাজের একটা অংশ কীভাবে সমাজ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে, এটা তার নমুনা। আমরা নাম ঠিক করে দিলাম। নাম লিখতে শেখানোর জন্য হাতে কাঠি ধরিয়ে দিলাম। দিনরাত পরিশ্রম করে, চোখের পানি ফেলে তারা নাম লেখা শিখল...এটা ১০০ বছর পরের অবস্থা। ১০০ বছর আগে রোকেয়া সেই আমলে যে স্বপ্ন দেখেছেন, সেটা বিশ্বাস করা যায় না। আজকে অনেকে বলে, “হ্যাঁ, সুন্দর কথা বলেছে...”। সুন্দর কথা না, রোকেয়া বিপ্লবী কথা বলেছেন। সমাজকে ঝাঁকুনি দিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু সেই ঝাঁকুনি বহন করে নিয়ে যাওয়ার মতো ব্যক্তি আর এল না। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বেগম রোকেয়া কোনো কাজ সমাজকে বাদ দিয়ে করেননি। সব সময় সমাজকে নিয়েই করেছেন। ১০০ বছর আগে রোকেয়া লিখেছেন, নারী-কন্যাদের লেখাপড়া শেখাও, যাতে সে অন্ন উপার্জন করতে পারে। সেখান থেকে আমরা শিখতে পারছি না কেন? আয়োজন করছি, কিন্তু শিখতে পারছি না। আমাদের দৈনন্দিন পথে রোকেয়া সঙ্গে থাকুক, তাহলেই অগ্রসর হতে পারব।’

এ বছরও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ি; ইকোনমিকস অনার্সে অনেক ছেলে ছিল, মেয়ে ছিল মাত্র চারজন। কোনো কোনো বিভাগে কোনো মেয়েই ছিল না। এখন যেকোনো শিক্ষায়তনে যাও, মেয়ে শিক্ষার্থীরা উপচে পড়ছে। আমি খোঁজ নিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন অর্ধেক-অর্ধেক। আমি জিজ্ঞেস করলাম, মেয়েদের হল কয়টা? আমাকে বলল, পাঁচটা। আর ছেলেদের হল ১৩টা। এটা কেমন বিচার হলো? মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা তো আগে করতে হবে।’

এ বছরও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারীদের সামনে রেখেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মেয়েরা গণ-অভ্যুত্থানে তাদের নেতৃত্ব দেখিয়েছে। আজকের নারী সমাজ গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী নারী সমাজ। এটা ভিন্ন নারী সমাজ। তাদের হাত ধরেই নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। এই নারী সমাজ শুধু নারীদের নয়, সবাইকে উজ্জীবিত করবে। সে জন্যই নারীদের উঁচু স্তরে ধরে রাখা আমাদের জন্য দরকার। নারীদের সামনে রেখেই আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক।’

আজকের অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়’ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ।

ভোটের ঘণ্টা বাজবে আজ

মাহফুজ-আসিফের পদত্যাগ তফসিলের আগের দিন

১৬ ডিসেম্বর চালু হবে এন‌ইআইআর, অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন নিবন্ধন করা যাবে মার্চ পর্যন্ত

ভারত হাসিনাকে ফেরত না দিলে কিছু করার নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

‘নিরামিষ ক‍্যাপশনে’ আসিফ-মাহফুজকে শুভকামনা জানালেন ফারুকী, অরিজিনাল ক‍্যাপশন বললেন পারসোনালি

সম্পদের হিসাব দিয়েছি, কূটনৈতিক পাসপোর্ট ক্যানসেল করেছি: আসিফ মাহমুদ

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

বিজয় দিবস উপলক্ষে সাজা মওকুফে মুক্তি পাচ্ছেন পাঁচ বন্দী

জয়কে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

বিদেশি আইনজীবী চান আনিসুল–সালমান