হোম > জীবনধারা > ভ্রমণ

এখানে একদা দামোদর নামে নদী ছিল

মাসুদ উর রহমান

প্রাচীন বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ ফিরোজপুর থেকে কখন যে পিরোজপুর নামে পরিচিত হয়ে গেছে, সেটা এখন আর কেউ মনে রাখে না। পিরোজপুর গেলে আপনার কখনো কখনো মনে পড়তে পারে মোগল সম্রাট শাহ সুজার অকালপ্রয়াত পুত্র ফিরোজ শাহর নাম। এসব কিংবদন্তি আর প্রকৃতির কথা শুনতে শুনতে আকৃষ্ট হয়েছিলাম পিরোজপুর যাওয়ার জন্য।

এবার অনেকটা হুট করে পিরোজপুর চলে আসা হলো। সেই আসাতে অনেক নাটকীয়তা ছিল। সে নাটকের অংশ হয়ে গেল ছোট ছেলে। দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে আরেক দিন ছুটি যুক্ত হওয়ায় বেরিয়ে পড়লাম। উঠে পড়লাম ঢাকা থেকে পিরোজপুরগামী বাসে। সার্কিট হাউসে থাকার বন্দোবস্ত।

একেবারে কাকডাকা ভোরে ঘুম ভেঙে গেল। ভোরের আলো ফোটেনি বলে অজ্ঞতা সার্কিট হাউসের ছাদে পায়চারি করলাম। তারপর এক পা দুই পা করে এগিয়ে গেলাম। নিরাপত্তাকর্মীরা কিছু বলছেন না দেখে সোজা চলে গেলাম দামোদরপাড়ে। দামোদর নদী হিসেবেই পরিচিত ছিল একদা। তখন এর বুকে চলাচল করত কলকাতা-বরিশাল পথের স্টিমার। এখন শীর্ণ-রোগা খাল! যদিও তার বুক এখনো ফুলে-ফেঁপে ওঠে নিয়ম করে জোয়ার এলে। স্থানীয় ভাষায় এর আরেক নাম ভারানী খাল। শহরের বুক চিরে দুই পাশের কালীগঙ্গা ও বলেশ্বরকে যুক্ত করেছে বলেই এমন নাম। ভারানী খালের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, একই সময় দুই দিক দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে আবার একই সময় দুই দিক থেকে বের হয়ে যায়। এ কারণেই এর জলরাশি স্বচ্ছ নয়, ঘোলাটে।

এ ছাড়া শহরের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে গেছে কচা নদী। হুলারহাট লঞ্চঘাট এ নদীর তীরে। কচা নদীর যে অংশটি হুলারহাটের দিকে, সে অংশটি খুব চওড়া ও গভীর। সে অংশে বড় লঞ্চ-স্টিমার চলে। অবশ্য বর্তমানে এই কচা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে অষ্টম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সেতু। পুরো নাম ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সেতু’। বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের বেকুটিয়ায় কচা নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণের ফলে পদ্মা সেতু নির্মাণের পুরো সুবিধা ভোগ করবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষ।

পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, নেছারাবাদ— এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটিতে রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পেয়ারার ভাসমান হাট, কবি আহসান হাবিবের পৈতৃক ভিটা, রায়েরকাঠি জমিদারবাড়ি, হরিণপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক, ভান্ডারিয়া মিয়াবাড়ি মসজিদ, মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুরের ডিসি পার্ক ইত্যাদি।

যা দেখা যাবে পিরোজপুরে
ভাসমান পেয়ারা হাট পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর, কুরিয়ানা নামক জায়গায় নৌকায় করে এই ভাসমান পেয়ারা হাট বসে।

মমিন মসজিদ
১৯১৩ সালে মসজিদটি মৌলভি মমিন উদ্দিন আকন কর্তৃক নির্মাণ শুরু করেন এবং ১৯২০ সালে সম্পন্ন করেন। মসজিদটি এ দেশের ঐতিহ্যবাহী আটচালা স্থাপনারীতির এক অনন্য উদাহরণ। বৈচিত্র্যময় ক্যালিগ্রাফির ব্যবহার এ মসজিদটির অলংকরণে বিশিষ্টতা দান করেছে। এটি পেরেকবিহীন সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি একটি মসজিদ। 

পিরোজপুর ডিসি পার্ক
ডিসি পার্ক পিরোজপুর জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহ্যবাহী পার্ক। পার্কটি বলেশ্বর নদের তীরে অবস্থিত। এখানে পাঁচতলা উচ্চতাবিশিষ্ট একটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে বলেশ্বরের প্রাকৃতিক এবং মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।  

রায়েরকাঠি জমিদারবাড়ি
প্রায় ৩৫০ বছর আগে এখানে একটি জমিদার পরিবার বসবাস করত। ১৬৫৮ সালে এখানে কালীমন্দির নির্মাণ করা হয়। এই স্থানে অতিথিশালা, আইনসভা, বলরুম, বেশ কিছু হিন্দু মন্দিরসহ দুই শতাধিক স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। যেগুলোর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০টি স্থাপনা ছিল বেশ বিশালাকৃতির।

ঘুরে আসুন কাউয়ার চর

দেশে সরকার অনুমোদিত পাঁচ তারা ২০টি হোটেল

২০২৬ সালে ভ্রমণ করার নিরাপদ দেশগুলো

ট্যুর মুরল্যান্ডের ১৪তম বর্ষপূর্তি

বিশ্বে পকেটমারি ও প্রতারণায় শীর্ষে যেসব শহর

বিদেশ ভ্রমণে যেসব ভুলে পর্যটকদের জরিমানা হতে পারে

পাঁচ তারা হোটেলে যেসব ভুল করবেন না

মালদ্বীপ ভ্রমণ এখন আর শুধু ধনীদের জন্য নয়, অনেক সাশ্রয়ী

যে ৭ কারণে বয়স্ক ও তরুণদের ভ্রমণ পরিকল্পনায় তফাত থাকে

সেন্ট মার্টিনে রাত্রিযাপনের সুযোগ মিলবে দুই মাস, দিনে ২ হাজারের বেশি পর্যটক নয়