যাদের প্রতিদিন বাড়ির বাইরে যেতে হয় বিভিন্ন কাজে, তাঁদের অনেকেই রোজ শ্যাম্পু না করে থাকতে পারেন না। যদিও এখন গরমকাল নয়, ফলে মাথার ত্বক ও চুল সেভাবে ঘামছে না। কিন্তু বায়ুদূষণের এ শহরে ধুলাবালুর প্রকোপ তো থেমে নেই। আবহাওয়া যত শুষ্ক হবে, ধুলাবালু তত উড়বে। পাশাপাশি গাড়ির ধোঁয়াও চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আর তাই তো, রোজ রাতে বাড়ি ফিরে শ্যাম্পু না করলে স্বস্তি মেলে না অনেকের। কিন্তু এটাও ঠিক, প্রতিদিন শ্যাম্পু করার ফলে মাথার ত্বক দ্রুত শুষ্ক হয়ে ওঠে, আর্দ্রতা হারায় চুল। ফলে এর ঝলমলে ভাব ও মাথার ত্বকের সুস্থতার কথা বিবেচনায় রেখে জেনে নিন, শীতকালে সপ্তাহে ঠিক কতবার শ্যাম্পু করবেন।
চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু করতে হবে
শীতে মাথার ত্বক ও চুল উভয়ই পানিশূন্যতায় ভোগে। এ সময় চুল প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে যেমন শুষ্কতা বেড়ে যেতে পারে, তেমনি কম ধুলেও জট পড়া বা চুলকানির সমস্যা হতে পারে। তাই সপ্তাহে কতবার চুল ধোবেন, তা নির্ভর করে প্রত্যেকের মাথার ত্বক, জীবনযাপনের ধরন ও চুলের ধরনের ওপর।
মাথার ত্বক ও চুল শুষ্ক হলে
যাঁদের মাথার ত্বক ও চুল এমনিতেই শুষ্ক, তাঁরা শীতকালে এ সমস্যায় আরও বেশি ভোগেন। ফলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুলের ক্ষতি ছাড়া ভালো কিছু হবে না। তাই যাঁদের মাথার ত্বক ও চুল স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শুষ্ক, তাঁরা সপ্তাহে দুদিনের বেশি শ্যাম্পু করবেন না। চুল ধোয়ার জন্য সালফেটমুক্ত বা ময়শ্চারাইজারযুক্ত শ্যাম্পু বেছে নিন। প্রতিবার ধোয়ার পর চুল হাইড্রেট করবে, এমন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার কেনার সময় তাই লেবেল দেখে কিনতে হবে। যেহেতু বেশি শ্যাম্পু করতে নিষেধ করা হচ্ছে, তাই বাইরে বের হলে চুলে স্কার্ফ জড়িয়ে বের হোন। এতে ঠান্ডা ও ধুলাবালু দুটো থেকেই বাঁচা যাবে।
মাথার তৈলাক্ত ত্বক ও চুল
সারা বছর মাথার ত্বক তৈলাক্ত থাকলেও শীতের সময় এ সমস্যা খানিক কমে যায় বলে মনে মনে খুশি হচ্ছেন নিশ্চয়ই। এতে কাজ কমল। রোজ শ্যাম্পু করার ঝক্কি নেই। শীতে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার শ্যাম্পু করাই আপনার জন্য যথেষ্ট। এর ফলে একদিকে যেমন মাথার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, অন্যদিকে জট পড়ার সমস্যা থাকে না। তবে চুলে মৃদু এক্সফোলিয়েশনের ক্ষমতা রয়েছে, এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। শ্যাম্পু ব্যবহারের পর সুরক্ষাকবচ হিসেবে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
কোঁকড়ানো চুলে শ্যাম্পু করার নিয়ম
শীতে কোঁকড়া চুল যেন আরও রুক্ষ হয়ে ওঠে। এ ধরনের চুল যদি ঢেকে বাইরে বের হতে পারেন, তাহলে সপ্তাহে এক বা দুবারের বেশি শ্যাম্পু করার প্রয়োজন নেই। তবে যেহেতু এ ধরনের চুল রুক্ষতার সমস্যায় বেশি ভোগে এই ঋতুতে, তাই সপ্তাহে একবার চুলে ঘরোয়া প্যাক লাগালে উপকার পাবেন। সপ্তাহে এক দিন মধু, টক দই ও নারকেল তেলের মিশ্রণ মাথার ত্বক ও পুরো চুলে মেখে রাখুন ২০ মিনিট। টক দইয়ে রয়েছে প্রোবায়োটিকস ও ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মাথার ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করে আর্দ্র রাখে। মধু ও নারকেল তেল প্রাকৃতিক ময়শ্চরাইজার। এগুলো চুল নরম ও মসৃণ রাখতে খুব ভালো কাজ করে।
শ্যাম্পু করার আগে খুশকি তাড়াবেন না?
সপ্তাহে যে কদিন চুলে শ্যাম্পু করবেন, সে কদিন মাথার ত্বক ও চুলে পাতিলেবুর রস ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে দিন। এটি খুশকি বা মাথার ত্বকের সংক্রমণ দূর করে। তবে অনেকের পাতিলেবুর রসে অ্যালার্জি রয়েছে। তাই ব্যবহারের আগে কানের পেছনের ত্বকে লেবুর রস লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন, চুলকানি হচ্ছে কি না। কোনো সমস্যা না দেখা গেলে ব্যবহার করুন।
সূত্র: স্কিনস্ক্র্যাফট, হেলথলাইন ও স্টাইলক্রেজ