বাস্তুমতে, ব্যবহৃত হচ্ছে না এমন জিনিসপত্র যদি দিনের পর দিন জমতে থাকে, তাহলে ঘরে নেতিবাচক শক্তি বিরাজ করে। এই নেতিবাচক শক্তির বিভিন্ন রূপ রয়েছে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঘরে পড়ে থাকলে তাতে ধুলা-ময়লা জমে এবং তা থেকে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ হয়। তা ছাড়া বাড়তি জিনিসপত্র ঘরে জমা হলে দৈনন্দিন কাজকর্মেও অসুবিধা দেখা দেয়। তাই নির্দিষ্ট সময় পর পুরো বাড়ি থেকে অব্যবহৃত এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেছে সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেয় বাস্তুশাস্ত্র।
আমাদের সবার বাড়িতেই কমবেশি কিছু জিনিস রয়েছে, যা একদম অপ্রয়োজনীয় কিংবা মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে, কিন্তু ব্যবহৃত হচ্ছে না। তা ছাড়া বিভিন্ন সময় আমরা নানা রকম জিনিস কিনে ঘর ভরে ফেলি। একসময় দেখা যায়, সেসব জিনিস আমাদের তেমন কোনো কাজে তো লাগেই না, বরং শেলফ বা ঘরের বিভিন্ন কোণে জমে থাকে বলে ঘর অপরিচ্ছন্ন দেখায়। শীতে লেপ, কম্বল, কার্পেট নামানোর ধকল আছে। এর আগেই বাড়ি থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরানোর বন্দোবস্ত করুন।
কয়েক দিন সময় নিন
কয়েক দিন হাতে নিন এই কাজ করার জন্য। বাসায় যেসব জিনিস কোনো কাজেই আসছে না বা আর ব্যবহার করা হবে না, সেগুলোর একটা তালিকা তৈরি করুন। যেমন খালি বোতল, পুরোনো কাপড়, বেডশিট, ফুলের টপ, খেলনা, মেয়াদোত্তীর্ণ জিনিস, ফ্রিজের অপ্রয়োজনীয় জিনিস, ভাঙা বা পুরোনো শোপিস, পুরোনো থালাবাসন ইত্যাদি। তারপর একেক দিন একেক ঘর থেকে এসব জিনিসপত্র বের করে বারান্দায় বা কোনো একটা জায়গায় রাখুন। ছুটির দিন বসে এই জিনিসগুলোকে রিসাইকেল, কাউকে দিয়ে দেওয়া, ফেলে দেওয়া—এই তিন ভাগে ভাগ করে নিন। কারণ, পুরোনো বলেই যে সব একেবারে ফেলে দিতে হবে, তা-ও নয়। কিছু রিসাইকেল করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে তোলা যায়। আর কিছু জিনিস একেবারে ফেলে না দিয়ে কাউকে দিয়েও দেওয়া যায়।
অপ্রয়োজনীয় কি না কীভাবে বুঝবেন
অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো জড়ো করার পরেও ফেলা হয় না। আবার তুলে রাখি এই ভেবে যে পরে হয়তো কজে লাগবে। এমনটা করা যাবে না। একটু হিসাব করুন, যেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে না, সেগুলো ঠিক কত দিন ধরে আলমারিতে, শেলফে বা স্টোরে পড়ে আছে। এই পড়ে থাকার মেয়াদ যদি হয় তিন মাস থেকে এক বছর; তাহলে ধরে নিন, এগুলো রেখে দেওয়ার কোনো মানে নেই। প্রয়োজনে দান করে দিন। বিভিন্ন সংগঠন জামাকাপড় থেকে শুরু করে নিত্যব্যবহার্য পুরোনো জিনিস সংগ্রহ করে বিভিন্ন বস্তিতে দান করে। সেসব সংগঠনেও এসব জমা দিতে পারেন। সমাজসেবাও হবে, ঘরও হালকা হবে।
প্রয়োজন ছাড়া কেনাকাটা বন্ধ করুন
অনেকে শপিং মলে গেলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। পছন্দ হলেই জামা, জুতা, ক্রোকারিজ কিনে ফেলেন। এই অভ্যাস থেকে সরে আসুন। জীবনযাপনের জন্য ঠিক যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই কিনুন। দেখবেন এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করাটাও অনেক সহজ হয়ে গেছে।
পুরোনো পাপোশ ফেলে দিন
পুরোনো পাপোশ বাতিল করার এটাই সেরা সময়। এখন নানা রকম ছোট ও বড় পাপোশ ফুটপাত থেকে শুরু করে শপিং মলে পাওয়া যাবে। তাই ছেঁড়া, জীর্ণ হয়ে আসা যে পাপোশ বদলানোর বলেও এত দিন সেটা করা হচ্ছিল না, সেটা করুন এ মাসেই।
টুকিটাকি যা চোখ এড়িয়ে যায়
রান্নাঘরের মাজুনি ঠিক কবে বদলেছিলেন, মনে পড়ে? আবার হাঁড়ি ধরার যে কাপড়, সেটাও তো বদলাতে হবে। রান্নার সময় বারবার হাত মুছতে যে ন্যাপকিন ব্যবহার করেন, সেটাও এই সুযোগে বদলে নিন। এই সব কটি জিনিস থেকে জীবাণু ছড়ায়। তাই খুব বেশি তেল চিটচিটে এবং নোংরা হওয়ার আগে সেগুলো বদলে নেওয়া ভালো।
সূত্র: কান্ট্রি লিভিং ও অন্যান্য