হোম > চাকরি > ক্যারিয়ার পরামর্শ

মেন্টরশিপ: যে হাত তুলে ধরে উন্নতির শিখরে

ক্যারিয়ার ডেস্ক

প্রতীকী ছবি

ক্যারিয়ার একটি অজানা যাত্রাপথের মতো। যেখানে প্রতিটি মোড়ে থাকে অনিশ্চয়তা আর চ্যালেঞ্জ। এই যাত্রায় অনেক সময়ই পেশাজীবী বা শিক্ষার্থী নিজেকে একাকী ও দিশেহারা মনে করেন। এই সময় প্রয়োজন হয় এমন একজন অভিজ্ঞ পথপ্রদর্শকের, যিনি আগে থেকে পুরো মানচিত্র দেখেছেন। সেই পথপ্রদর্শকই হলেন ‘মেন্টর’।

মেন্টরশিপ হলো একটি কৌশলগত বন্ধন, যা শুধু উপদেশ দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি এমন একটি গঠনমূলক সম্পর্ক, যেখানে মেন্টর তাঁর মূল্যবান অভিজ্ঞতা, নেটওয়ার্ক এবং অন্তর্দৃষ্টি শিষ্যকে দেন, যার ফলে শিষ্যের লক্ষ্য অর্জন হয় অনেক দ্রুত ও নিশ্চিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে এই শক্তিশালী মেন্টর-মেন্টি সম্পর্ক একজন শিষ্যের ক্যারিয়ারে ইতিবাচক ঢেউ এনে দিতে পারে।

মেন্টরশিপ কী ও কেন জরুরি

মেন্টরশিপ বলতে এমন একটি নিয়মিত সম্পর্ককে বোঝায়, যেখানে একজন বেশি অভিজ্ঞ ব্যক্তি (মেন্টর) একজন কম অভিজ্ঞ বা শিক্ষানবিশকে (মেন্টি) গাইড করেন, পরামর্শ দেন, উৎসাহ দেন। এটি শুধু পরামর্শ দেওয়ার বিষয় নয়; বরং এটি একটি ধারাবাহিক ও বিশ্বাসভিত্তিক সম্পর্ক। যেখানে অভিজ্ঞ ব্যক্তি (মেন্টর) তাঁর অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও নেটওয়ার্ক অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ বা শিক্ষানবিশের (মেন্টি) সঙ্গে ভাগ করে নেন। এ যাত্রায় দুই প্রজন্মের অভিজ্ঞতা মিলেমিশে তৈরি করে উন্নতির সেতুবন্ধ।

আত্মবিশ্বাস ও গন্তব্য নির্ধারণে ভূমিকা

ক্যারিয়ারের শুরুটা প্রায়ই অনিশ্চয়তায় ভরা থাকে। কোন পথে যাব, কোন দক্ষতা উন্নয়ন করব কিংবা নিজের সামর্থ্য কতটা—এসব প্রশ্নে অনেকেই দোটানায় পড়েন। ঠিক এখানেই একজন মেন্টরের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। একজন দক্ষ মেন্টর তাঁর মেন্টির চিন্তাগুলোকে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করেন। তিনি শুধু পরামর্শ দেন না, বরং প্রশ্ন করেন, ‘তোমার আসল আগ্রহ কোথায়?’, ‘তুমি কেমন জীবনযাপন চাও?’। এই প্রশ্নগুলোর মধ্য দিয়েই মেন্টি নিজের ভেতরের লক্ষ্য ও সামর্থ্য আবিষ্কার শুরু করে।

স্কিল উন্নয়ন ও যোগাযোগ নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি

ক্যারিয়ারে অগ্রসর হতে শুধু ভালো কাজ করাই যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে দরকার হয় যোগাযোগের দক্ষতা, কাজের বাইরে-ভেতরে নেটওয়ার্ক ও সুযোগের সন্ধান। একজন মেন্টর এসব ক্ষেত্রেও মেন্টিকে সহায়তা করেন। মেন্টর তাঁর নিজের পরিচিত ব্যক্তিদের মেন্টির সঙ্গে পরিচয় করাতে পারেন। মেন্টিকে বিভিন্ন ফোরাম বা ইভেন্টে অংশ নিতে উৎসাহ দিতে পারেন।

সমস্যা সমাধানে সহায়তা

ক্যারিয়ারে কখনো না কখনো কঠিন সিদ্ধান্ত, ভুল সুযোগ কিংবা সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়। এমন পরিস্থিতিগুলোতে মেন্টরের অভিজ্ঞতা বড় সহায়ক হয়। একজন ভালো মেন্টর বুঝতে পারেন, মেন্টির দুর্বলতা কোথায়, কী কী ভুল হয়েছে এবং সেটা কীভাবে সংশোধন করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, একজন মেন্টর এমন দায়িত্ব দিয়ে থাকতে পারেন, যা মেন্টির জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। পরে অবশ্য তা নিয়ে দুজনের আলোচনা হয়। এই ধরনের সুযোগ মেন্টিকে ‘হাতে হাতে শিখতে’ সহায়তা করে।

ক্যারিয়ারের বিকল্প সন্ধানে উৎসাহ

একজন মেন্টর শুধু নির্দিষ্ট পথে এগোতে বলেন না, বরং তিনি নতুন দিক চিনতে শেখান। অনেক সময় মেন্টির দক্ষতা বা আগ্রহ অন্য কোনো খাতে বেশি কার্যকর হতে পারে। মেন্টর সেই সম্ভাবনাগুলো দেখিয়ে দেন। নিজের অভিজ্ঞতা ও বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে তিনি বোঝান, ক্যারিয়ার মানে একটাই রাস্তা নয়, বরং অনেক সম্ভাবনার সংমিশ্রণ। ফলে মেন্টি সাহস পায় নতুন কিছু ভাবতে, ক্ষেত্র বদলাতে বা নিজস্ব উদ্যোগ নিতে।

মেন্টরশিপের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশের শিক্ষাজীবন ও পেশাজীবনের শুরুতে মেন্টরশিপ এখনো তেমন সাধারণ নয়। তবে এটা দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। করপোরেট সেক্টর, স্টার্টআপ, বিশ্ববিদ্যালয়—সবখানেই মেন্টরশিপের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আছে চ্যালেঞ্জও। মেন্টর ও মেন্টির মধ্যে বিশ্বাসঘন যোগাযোগ তৈরি করা, উপযুক্ত মেন্টর খোঁজা ইত্যাদি। এ ছাড়া সংস্কৃতি, প্রেক্ষাপট ভেদে মেন্টরশিপকে স্থানীয়ভাবে মানিয়ে নেওয়া জরুরি।

সোর্স: মেন্টর লোপ ওয়েবসাইট ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (যুক্তরাষ্ট্র)

পড়াশোনার পাশাপাশি জাপানে চাকরির সুযোগ

যেমন হবে বার কাউন্সিল প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি

ক্যারিয়ারে অগ্রগতির বড় শক্তি নেটওয়ার্কিং

মেডিকেল ভর্তি: প্রস্তুতির সঠিক কৌশল

চাকরিপ্রার্থীদের শেখার আগ্রহ থাকতে হবে

চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরুর ৫ ধাপ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও বিসিএস দিলেন?

আইনে পড়ার ভবিষ্যৎ

প্রথমবার টিম লিডার হলে যেভাবে সহকর্মীদের সামলাবেন

বিসিএসের নমুনা ভাইভা: সিভিল সার্ভেন্ট কারা?