হোম > ইসলাম

যে গুণ মানুষকে আল্লাহর প্রিয় বানায়

ইসলাম ডেস্ক 

ছবি: সংগৃহীত

মানুষ মাত্রই প্রয়োজন আছে। আহার-বিহার, পোশাক-আশাক, আরাম-বিশ্রাম নানা প্রয়োজনে আবর্তিত হয় আমাদের জীবন। ইসলাম ধর্মের গণ্ডিতে থেকে এসব প্রয়োজন পূরণ করার শুধু অনুমোদনই নয়, বরং ক্ষেত্রবিশেষ রয়েছে সওয়াবের অঙ্গীকার। তবে ত্যাগ, পরার্থপরতা, অন্যকে প্রাধান্য দেওয়া বলে একটি কথা আছে।

নিজের চাহিদা দাবিয়ে রেখে অন্যকে সুযোগ করে দেওয়া ইসলামের সুমহান আদর্শের জাজ্বল্যমান একটি দিক। যার বিভা ও দীপ্তি ব্যক্তিজীবনকে করে তোলে আলোকময়। বন্ধু-স্বজন, সহকর্মী ও সফরসঙ্গীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। ব্যক্তিত্ববান সুপুরুষ রূপে নিজেকে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।

শুধু তা-ই নয়, এদের প্রশংসায় মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, (যুদ্ধ ব্যতীত মুসলমানদের হাতে আসা রাষ্ট্রীয় সম্পদে) তাদেরও প্রাপ্য, যারা পূর্ব থেকেই এ নগরে ইমানের সঙ্গে অবস্থানরত। যে কেউ হিজরত করে তাদের কাছে আসে, তাদের তারা ভালোবাসে এবং যা কিছু তাদের (মুহাজিররা) দেওয়া হয়, তার জন্য নিজেদের অন্তরে কোনো চাহিদা বোধ করে না এবং তাদের তারা নিজেদের ওপর প্রাধান্য দেয়, যদিও তাদের অভাব অনটন থাকে। যারা স্বভাবগত কার্পণ্য হতে মুক্তি লাভ করে, তারাই তো সফলকাম। (সুরা হাশর: ০৯)

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারীদের প্রথম কাতারে যাদের অবস্থান। আমাদের সেরে তাজ। সাহাবায়ে কেরামের জীবন ছিল পরার্থপরতার বাস্তব নমুনা।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একবার নবীজি (সা.)-এর কোনো এক সাহাবিকে ছাগলের মাথা হাদিয়া দেওয়া হলো। তখন তিনি বললেন, ‘আমাদের চেয়ে আমার অমুক ভাই এবং তার পরিবারের উক্ত হাদিয়ার বেশি প্রয়োজন।’ এ কথা বলে তিনি তা (তার সেই ভাইয়ের কাছে) পাঠিয়ে দিলেন। এভাবে উক্ত হাদিয়া তিনি (দ্বিতীয় ব্যক্তি) তার আরেক ভাইয়ের কাছে পাঠালেন। এমনকি সাত ঘর ঘুরে প্রথম ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছাল। মহান আল্লাহ এ পরিপ্রেক্ষিতেই অবতীর্ণ করেছেন, ‘আর তারা নিজেদের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও।’ (শুআবুল ইমান: ৩৪৭৯)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে।’ তখন তিনি তাঁর স্ত্রীদের কাছে খবর নিয়ে দেখলেন, ঘরে খাবার নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘এমন কেউ আছে কি, যে আজ রাতে এ লোকটিকে মেহমানদারি করাতে পারে? আল্লাহ তার প্রতি রহম করবেন।’ তখন আনসারদের একজন দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি আছি।’ এরপর তিনি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে গেলেন এবং নিজ স্ত্রীকে বললেন, ‘তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মেহমান। কোনো জিনিস লুকিয়ে রাখবে না।’ স্ত্রী বলল, ‘আল্লাহর কসম! বাচ্চার খাবারটুকু ব্যতীত আমার কাছে আর কিছু নেই।’ সাহাবি বললেন, ‘বাচ্চা রাতের খাবার চাইলে তাকে ঘুম পাড়িয়ে এসো এবং বাতি নিভিয়ে দাও। আজ রাতে আমরা উপবাস করে কাটাব।’ তাঁর স্ত্রী তা-ই করলেন। পরদিন সকালে ওই সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হলে নবীজি বললেন, ‘আল্লাহ অবশ্যই অমুক এবং অমুক ব্যক্তির (স্বামী-স্ত্রী) প্রতি আনন্দিত হয়েছেন বা তাদের কারণে হেসেছেন।’ (শুআবুল ইমান: ৩৪৭৮)

হাদিসের ভান্ডারে অন্যকে প্রাধান্য দেওয়ার এমন বহু ঘটনা আছে। যেগুলোর শিক্ষা আমাদের বাস্তব জীবনে ধারণ করলে পরার্থপরতায় উজ্জীবিত হবে আমাদের জীবন।

লেখক: মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আন নোমান আরীফী, সিনিয়র উস্তাদ, মারকাযুল উলুম আল ইসলামিয়া বনশ্রী, ঢাকা।

মসজিদগুলো হয়ে উঠুক শিশুবান্ধব

ফুটপাতে পথশিশুদের হিমশীতল রাত

ফরজ গোসলের সময় নারীদের চুল ধোয়ার বিধান

শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামার হারিয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

দাওয়াতুল হকের মারকাজি ইজতেমা শনিবার

একের পর এক ভূমিকম্প মুমিনকে যে সতর্কবার্তা দিয়ে যাচ্ছে

স্ত্রীর সঙ্গে ভালোবাসার গভীরতা বাড়াবে যে সুন্নাহ

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

কুকুরকে পানি পান করিয়ে আল্লাহর ক্ষমা পেয়েছিলেন যে নারী