হোম > ইসলাম

ধৈর্য ও সহনশীলতা মুমিনের ভূষণ

ইসলাম ডেস্ক 

আরবি সবর শব্দের অর্থ ধৈর্য, সহনশীলতা ও সংযম। সবরকে বিষাক্ত কাঁটাযুক্ত বৃক্ষের ফল সদৃশ বলা হয়। ফল আহরণ করতে গেলে কাঁটার আঁচড়ে হাত ক্ষতবিক্ষত হতে পারে। সবরের মাধ্যমে মানুষ জীবনে স্বস্তি খুঁজে পায়, স্থিরতা লাভ করে। পরকালীন জীবনে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশাল প্রতিদান পেয়ে ধন্য হয়।

হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, যখন আমি আমার বান্দাকে তার প্রিয়তম জিনিস দ্বারা পরীক্ষা করি এবং সে সবর করে, আমি তাকে এ দুটির বিনিময়ে জান্নাত প্রদান করব।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৩২৯)

সবর মহান প্রতিপালক আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার অনন্য উপায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)

মুমিনের জীবনে হারাবার কিছু নেই। মুমিনের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের মুহূর্তগুলো মহান আল্লাহর শোকর আদায় করার মাধ্যমে পরম প্রাপ্তিতে পরিণত হয়। একইভাবে বিপদসংকুল ও বিপদাপন্ন মুহূর্তগুলোও সবরের মাধ্যমে হতে পারে জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনের অবস্থা বড়ই আশ্চর্যজনক। মুমিনের সকল কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ব্যতীত অন্য কারও জন্য এ কল্যাণ লাভের ব্যবস্থা নেই। তারা (মুমিন) আনন্দ লাভ করলে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে, তা তার জন্য কল্যাণকর। আর দুঃখ-কষ্টে আক্রান্ত হলে ধৈর্যধারণ করে, তাও তার জন্য কল্যাণকর হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৯৯৯)

যুগ যুগ ধরে চলে আসা নবী-রাসুল, ইমাম-মুজতাহিদ তথা আল্লাহর প্রিয়ভাজনদের জীবনে বিপদাপদের কশাঘাতে সবরের চর্চা ছিল অনেক বেশি। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর যত বেশি প্রিয়, তার জীবনে সবরের পরীক্ষাও ছিল তত বেশি।

হজরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন মানুষ সবচেয়ে বেশি বালা-মুসিবতে আক্রান্ত হয়?’ তিনি বললেন, ‘নবীগণ। এরপর তাদের চেয়ে নিম্নমানের ব্যক্তিগণ, এরপর তাদের চেয়ে নিম্নমানের ব্যক্তিগণ হালকা বিপদে আক্রান্ত হয়। মানুষকে তার দ্বীনের (পূর্ণতা) পরিমাণ অনুযায়ী বিপদগ্রস্ত করা হয়। সুতরাং তার দ্বীন পালনে যদি দৃঢ়তা থাকে, তবে (যেই পরিমাণ মজবুতি আছে) ঠিক সেই পরিমাণ তার বিপদও কঠিন হয়ে থাকে। অতঃপর সে এমন অবস্থায় উপনীত হয় যে সে জমিনে চলাফেরা করে অথচ তার কোনো পাপ অবশিষ্ট থাকে না। (মুসনাদে আহমাদ: ১৬০৭)। অর্থাৎ বিপদ-আপদের কষ্ট দিয়ে তার পাপ মুছে দেওয়া হয়।

ব্যক্তি সমাজ, রাষ্ট্র তথা জীবনের বিস্তীর্ণ পরিসরে ধৈর্য ও সহনশীলতার চর্চা আমাদের জীবনকে সর্বাঙ্গীণ সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত করে তুলতে পারে। অতএব ধৈর্যের চর্চায় আমাদের এগিয়ে আসা উচিত।

হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণের চেষ্টা করবে, আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা প্রদান করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১১০৯১)

লেখক: মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আন নোমান আরীফী, ইমাম, বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ, তেজগাঁও, ঢাকা।

জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা: মুমিনের করণীয়

মসজিদগুলো হয়ে উঠুক শিশুবান্ধব

ফুটপাতে পথশিশুদের হিমশীতল রাত

ফরজ গোসলের সময় নারীদের চুল ধোয়ার বিধান

শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামার হারিয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

দাওয়াতুল হকের মারকাজি ইজতেমা শনিবার

একের পর এক ভূমিকম্প মুমিনকে যে সতর্কবার্তা দিয়ে যাচ্ছে

স্ত্রীর সঙ্গে ভালোবাসার গভীরতা বাড়াবে যে সুন্নাহ

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫