তওবা হলো নিজের ভুল স্বীকার করে সঠিক পথে ফিরে আসা। এটি এমন এক পবিত্র অঙ্গীকার, যার মাধ্যমে মানুষ পাপের পথ ছেড়ে আল্লাহর দিকে মুখ ফেরায়, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং ভবিষ্যতে সেই পাপে না ফেরার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে। একজন মুমিনের জীবনে তওবা একটি অপরিহার্য অধ্যায়।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা: ২২২)
পাপ-পুণ্যের এই পৃথিবীতে মানুষ ভুল করবে, কিন্তু নিজের ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে ফিরে আসাই প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি তোমরা পাপকাজে লিপ্ত না হতে, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত করে এমন নতুন এক জাতি নিয়ে আসতেন, যারা পাপ করবে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে আর আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ মুসলিম: ২৭৪৯)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে আল্লাহ তাঁর বান্দার তওবা ও অনুশোচনাকে কতটা ভালোবাসেন।
সালাতুত তওবা: তওবার বিশেষ নামাজ
পাপ করার পর অনুশোচনা প্রকাশের অন্যতম উত্তম উপায় হলো সালাতুত তওবা বা তওবার নামাজ আদায় করা। এই দুই রাকাত নফল নামাজ গুনাহের সঙ্গে সঙ্গেই আদায় করা উচিত। এর মাধ্যমে বিগত জীবনের সকল গুনাহ থেকে তওবা করার সুযোগ পাওয়া যায়।
সালাতুত তওবার নিয়ম
নবীজি (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দা পাপ করে ফেললে এরপর ভালোভাবে অজু করে যদি দুই রাকাত নামাজ আদায় করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২১)
তাই জীবনের প্রতিটি ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়াই প্রকৃত মুক্তির পথ। এটি শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং আল্লাহর অসীম দয়া ও ক্ষমার প্রতি আমাদের এক গভীর বিশ্বাস।